ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

এককভাবে বৈশ্বিক বাণ্যিজিক প্ল্যাটফর্মে বস্ত্রখাতের সব মাধ্যমকে এক কাতারে এনে টেক্সটাইল সোর্সিং জগতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পর্দা উঠলো ইনটেক্স বাংলাদেশের ১৪তম আসরের।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এবারের আসরের উদ্বোধন করেন বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান।

তিন দিনব্যাপী ইনটেক্স বাংলাদেশ এক্সপো চলবে ১ জুন পর্যন্ত। যেখানে ভারত, চীন, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাইওয়ানসহ সাতটি দেশের দুই শতাধিক শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদক, সরবরাহকারী এবং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

তিন দিনব্যাপী এই মেলায় সুতা, কাপড়, ডেনিম কাপড়, রঙ, রাসায়নিক উপকরণসহ পোশাক তৈরির বিভিন্ন উপকরণ এবং প্রয়োজনীয় উপাদান প্রদর্শিত হবে।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইনটেক্স বাংলাদেশ ভারতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান টেক্সপ্রোসিল এবং পেডেক্সিলের সহযোগিতায় ‘মেড ইন ইন্ডিয়া টেক্সটাইল প্যাভিলিয়নে’ শতাধিক ভারতীয় কোম্পানির পাশাপাশি ‘চায়না প্যাভিলিয়ন’ নিয়ে এসেছে।

যার ফলে গত দুই বছরে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ক্রয়াদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ইনটেক্স বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং সোর্সিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক কাতারে নিয়ে আসার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যেন ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করছে।
ইনটেক্স বাংলাদেশের উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, পোশাক খাতের সম্প্রসারণে সরকার নানা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। গার্মেন্টস শিল্পের বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার বৃদ্ধি আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। ইনটেক্স বাংলাদেশের মতো আয়োজন নিশ্চিতভাবে আমাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও কৌশল বিনিময়ে সহযোগিতা করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, আমাদের গার্মেন্টস খাতের বিস্তারে পণ্যের বৈচিত্র্য আনার কোনো বিকল্প নেই। ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন রপ্তানি বাজার তৈরিতে আঞ্চলিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা দরকার। পোশাক খাতে সংযুক্ত দক্ষিণ এশিয়ার নানা দেশের সঙ্গে মেলবন্ধনে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ ও দ্বার উন্মোচনে বিজিএমইএ প্রস্তুত রয়েছে।

ইনটেক্স বাংলাদেশের আয়োজক এবং ওয়ার্ল্ডেক্স ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক আরতি ভগত বলেন, পোশাক শিল্পে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ খাত সংশ্লিষ্ট বিবিধ কাঁচামালের জন্য নানা দেশের ওপর ভরসা রাখে। সেজন্য ইনটেক্স বাংলাদেশের মতো গ্লোবাল সোর্সিং প্ল্যাটফর্ম শুধু অগ্রাধিকারই নয়, প্রয়োজনও বটে। বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সাপ্লাই চেইন, পণ্য উৎপাদনে ঘাটতি পূরণ এবং উদ্ভাবনী মনোযোগ বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশে গার্মেন্টস উৎপাদনকারীদের সহায়তায় কাজ করছে ইনটেক্স বাংলাদেশ।

ইনটেক্স বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণ ইন্টারঅ্যাকটিভ বিজনেস ফোরাম (আইবিএফ) সেমিনারের সিরিজ প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে উচ্চমানসম্পন্ন বাজারের ধারণা দেবে। যা বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পকে চ্যালেঞ্জ এবং এর সমাধানের বাস্তব ধারণা দেবে। এই আলোচনাগুলো দেশীয় গার্মেন্টস শিল্পকে পণ্য উৎপাদনের বৈশ্বিক কেন্দ্র হতে সম্যক ধারণা দেবে এবং বর্তমান চাহিদা ও ফ্যাশন আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।

ওয়ার্ল্ডেক্স ইন্ডিয়ার উদ্যোগে ইনটেক্স বাংলাদেশের এ আয়োজনের সহযোগী হিসেবে আছে ভারতীয় প্যাভিলিয়নের সংগঠক টেক্সপ্রোসিল ও পেডেক্সিল, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ)।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মেলা টেক্সটাইল শিল্পে নেটওয়ার্কিং, দক্ষতা বিনিময়, সহযোগিতা, নতুন অংশীদারত্ব বৃদ্ধি এবং এই শিল্পের সম্প্রসারণের মজবুত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...