সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম সোহানকে (৪০) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার দুজন হলেন, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিন্দু ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সভাপতি ঝিনুক মিয়া।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। এর আগে এদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা শহরের খলিলগন্জ এলাকায় অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারের সামনে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বারেক হোসাইন আপনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিন্দুকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অপরদিকে রাতে শরিফুল ইসলাম সোহানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তারা সোহানের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতা সোহানের বন্ধু খন্দকার রেদোয়ান মাহমুদ জানান, শহরের খলিলগঞ্জ এলাকায় একটি প্রাইভেট জিপগাড়ী দাঁড়িয়েছিল। এসময় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের দুই নেতা সিয়াম ও রিয়াদের একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জিপের পাশে পড়ে যায় এবং দুজন আহত হন। পরে জিপে থাকা শরিফুল ইসলাম সোহানসহ অপর দুজন তাদেরকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
তিনি জানান, এর কিছুক্ষণ পরেই খবর পেয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার সহযোগীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। এসময় জিপে থাকা আমাদের দুজনকে নামিয়ে দিয়ে শরিফুল ইসলাম সোহানকে মারপিট করতে করতে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে আসে। এতে সোহান অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে শাপলা চত্বর ও ভোকেশনাল মোড়ে সড়ক অরবোধ করেন ব্যবসায়ীরা। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ গিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করে।
কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ মো. হারুনুর রশিদ হারুন বলেন, পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম সোহানের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল এ কে, এম ওহিদুন্নবী বলেন, এ ঘটনার পরপরই নিহতের স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পলিটেনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সভাপতিকে মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নিহত শরিফুল ইসলাম সোহান জেলা শহরের ঘোষপাড়ার হাটিরপাড় এলাকার মৃত আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও জেলা মোটর মালিক সমিতির সদস্য বলে জানা গেছে।