নভেম্বর ১৪, ২০২৪

শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে সাজা পাওয়া শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অহেতুক গ্রেপ্তার বা কারাগারে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তবে আদালত ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে রায় দেবেন তা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্টদের বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আজ রোববার এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, অহেতুক ড. ইউনূসকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা সরকারের নেই। তার মামলার রায় বিচারকরা দিবেন। সেই রায় কার্যকর করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার তা অবশ্যই করবে।

আনিসুল হক বলেন, বিচার বিভাগে আমরা আমূল পরিবর্তন আনতে পেরেছি। আজকের বিচার বিভাগ আগের থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এই বিভাগ সুউচ্চে থাকে, সবার উপরে থাকে। আগে চেম্বার শেয়ার করতে হতো, এজলাশও শেয়ার করতে হতো। এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে বিচার বিভাগ।

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগে বিচারকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে, স্বাধীন চিন্তা করতে পারবে। বিচার বিভাগ পরিবর্তন হয়েছে, অবকাঠামো পরিবর্তন হয়েছে।

এদিকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাজা স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে ৬ মাস সাজা স্থগিতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। রোববার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

এছাড়া আদালতের অনুমতি ছাড়া যাতে বিদেশ যেতে না পারেন এবং শ্রম আপিল আদালতে ড. ইউনূসের মামলা ৬ মাসে নিষ্পত্তি যেন হয় হাইকোর্টে এমন আবেদনও করা হয়েছে।

গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায় চ্যালেঞ্জ করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত। সেদিন শ্রম আদালতের দেয়া সাজাও স্থগিত করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে জামিন চেয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলার রায়ে ৬ মাসের সাজার বিরুদ্ধে ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে খালাস চেয়ে আপিলও করেছিলেন। ওইদিন সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আপিল করেন ড. ইউনূস।

এদিনই শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছয় মাসের সাজা স্থগিতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর।

গত পহেলা জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনে দায়ে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে শ্রম আদালত।

সাজা পেয়ে শ্রম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে ইউনূস। তার বিরুদ্ধে রয়েছে আরো অনেক মামলা। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলায় ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুদক।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...