ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

টানা ১০ ম্যাচ জয়ে ফাইনালের মঞ্চে পৌঁছানো ভারত যে হারবে সেটা কারোরই কল্পনায় ছিল না। তবে দলটা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলেই একটা লড়াই প্রত্যাশা করেছিল সবাই। কিন্তু লড়াইয়ের পাল্লা হেলে পড়লো একপাশে। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত দাপট দেখিয়ে রেকর্ড ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জিতে নিলো প্যাট কামিন্সের দল। অস্ট্রেলিয়ার এই জয়ের পেছনে কয়েকটি টার্নিং পয়েন্ট রয়েছে। যে পয়েন্টগুলো ঘুরিয়ে দিয়েছে ম্যাচের মোড়। সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।

১. টস জয়:
টস জিতেই মূলত ম্যাচের আসল কাজটা করছেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। শুরুতে ভাবা হয়েছিল, আগে ব্যাট করাই মঙ্গলজনক। পরে দেখা গেল, পিচ খুবই মন্থর এবং শুকনো। ফলে বল দেরিতে ব্যাটে আসছিল। রান করা সহজ হচ্ছিল না। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সময় পরিস্থিতি পুরোপুরি পাল্টে গেল। সন্ধ্যা ৭টা গড়াতেই শিশির অস্ট্রেলিয়ার জন্য আর্শীবাদ হয়ে আসলো। তাতে ভারতের স্পিনারদের জন্য অবস্থা হলো মহা ঝামেলার মতো। দিনের শেষে তাই টসও অজিদের জয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে।

২. ত্রাভিস হেডের উড়ন্ত ক্যাচ:
এই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে হেডের ক্যাচটাই হয়ে থাকলো জয় পরাজয়ের ব্যবধান গড়ে দেওয়া মোমেন্ট। এই ক্যাচেই মূলত ম্যাচ অর্ধেক জিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। রোহিত শর্মার ঝড় যেভাবে চলছিল, তাতে রান তিন’শ ছাড়িয়ে যাওয়া খুবই সম্ভব ছিল। তবে হতে দিলেন না হেড। ১১ মিটারের এক ক্ষিপ্ত দৌড়ে নিখুঁত কারিশমায় ভারতের হাত থেকে ছিনিয়ে নিলেন ১১ কিলোগ্রামের ট্রফিটাও।

৩. পেস ত্রয়ীর নিখুঁত বোলিং:
অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ জয়ের পেছনে পেস ত্রয়ী মিচেল স্টার্ক-জশ হ্যাজেলউড-প্যাট কামিন্সের ভূমিকা অনবদ্য। শুরু থেকে লাইন লেংথ বজায় রেখে গতির সাথে সুইংয়ের যে পসরা সাজিয়ে বসলেন, তাতেই আটকে গেলো ভারতের রানের চাকা। ব্যাট চালাতে গিয়ে পড়তে হয়েছে সুইংয়ের ছোবলের মুখে। কোহলি-রাহুল জুটির ১৮ ওভার পর্যন্ত কোনো বাউন্ডারি না আসার জন্যও কৃতিত্বের সবটা দাবি করতে পারেন পেসাররা। মূলত এদের জন্যই ভারতের রান আটকে গেছে আড়াইশ’র আগে। তাতে জয়ের ভীত শক্ত হয়েছে আরও।

৪. উড়ন্ত-দুরন্ত ফিল্ডিং:
ভারতের রান ২৪০ এ আটকে যাওয়ার পেছনে অজিদের ফিল্ডিংও বড় ভূমিকা রেখেছে। ডেভিড ওয়ার্নারের বুড়ো হাড়ের কাছেই অন্তত ৩০ রান গচ্ছা দিয়েছে রোহিত শর্মার দল। পয়েন্টে, কভারে এদিন জন্টি রোডসের মতো ঝাঁপিয়েছেন অজিরা। তাতে বাউন্ডারি যেমন আটকেছে হাতে, লক্ষ্যও নেমে এসেছে নাগালে, জয়ও এসে ধরা দিয়েছে আরও সহজে।

৫. অভিজ্ঞতার ব্যাটে চড়ে ষষ্ঠ শিরোপা জয়:
এই ম্যাচ জয়ের আরও একটা বড় কারণ অভিজ্ঞতা। দ্রুত তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ত্রাভিস হেড তার অভিজ্ঞতা দিয়ে আগলে দাঁড়ালেন। এই ভারতের বিপক্ষেই তো চলতি বছরের শুরুতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন হেড। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই সামলেছেন বুমরাহ-সিরাজ-শামির ত্রিমুখী সুইং, বাউন্সার, ইয়র্কার। অভিজ্ঞতা দিয়ে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন হলদে উৎসবের প্রান্তরে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...