নভেম্বর ১৮, ২০২৪

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে জেসিন্ডা আর্ডার্নের অব্যাহতি পর তার উত্তরসূরী হিসেবে এ পদে আসছেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির অন্যতম জেষ্ঠ্য নেতা ক্রিস হিপকিন্স (৪৪)। দেশটির একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিবিসি।

২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টের সদস্য হন ক্রিস হিপকিন্স। তারপর করোনা মহামারি প্রতিরোধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন ২০২০ সালের নভেম্বরে। বর্তমানে মহামারি প্রতিরোধ মন্ত্রণালয় ছাড়াও শিক্ষা, সরকারি সেবা ও পুলিশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিপকিন্স। আইনপ্রণেতা হিসেবে পার্লামেন্টে আসার আগে ক্রিস শিক্ষামন্ত্রীর উপদেষ্টা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের কার্যালয়েও কাজ করেছেন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্নের আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণার পর বর্তমানে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির নেতা নির্বাচনে দলের একমাত্র মনোনীত প্রার্থী ক্রিস হিপকিন্স। ফলে জেসিন্ডার উত্তরসূরি হতে যাচ্ছেন তিনিই। তবে এ জন্য রোববার তাকে পার্লামেন্টে লেবার পার্টির আনুষ্ঠানিক সমর্থন পেতে হবে।

দলের সমর্থন পাওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী হতে আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি থাকবে ক্রিসের জন্য। কারণ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি জেসিন্ডা আনুষ্ঠানিকভাবে গভর্নর জেনারেলের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। এরপর গভর্নর জেনারেল রাজা তৃতীয় চার্লসের পক্ষে ক্রিসকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেবেন।

গত ১৯ জানুয়ারি সবাইকে অবাক করে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন জেসিন্ডা অর্ডার্ন। সেদিন রাজধানী ওয়েলিংটনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করা সাড়ে পাঁচ বছর কঠিন সময় ছিল। জেসিন্ডা আরও বলেন, তিনি কেবল একজন মানুষ এবং তার সরে দাঁড়ানো দরকার।

আগামী ১৪ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্ট নির্বাচন। সেই নির্বাচনে আর প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হচ্ছেন না বল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন জেসিন্ডা। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়লেও নির্বাচন পর্যন্ত পার্লামেন্টের সদস্য থাকবেন উল্লেখ করেছেন করে তিনি বলেন।

২০১৭ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন জেসিন্ডা। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিউজিল্যান্ডের দায়িত্ব নেন। এছাড়া তিনি বিশ্বে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি ক্ষমতায় থাকাকালে মা হয়েছেন। এ রেকর্ডে প্রথমস্থানে আছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো।

রাজনীতি বিশ্লেষক বেন টমাস বলেছেন, আর্ডানের ঘোষণা বিরাট এক বিস্ময়, কারণ ২০২০ এর নির্বাচনের সময় দেখা তার দলের আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা পরবর্তীতে হ্রাস পেলেও দেশের পছন্দের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সবগুলো জরিপে এগিয়ে আছেন তিনি।

জেসিন্ডা অবশ্য জানিয়েছেন, কাজ কঠিন ছিল এর জন্য সরে দাঁড়াচ্ছেন না তিনি, বরং অন্যরা আরও ভালো করবে বলে মনে করেন তিনি।

চলতি বছর জেসিন্ডার মেয়ে নেভের স্কুলজীবন শুরু হবে। ওই সময় তিনি কন্যার পাশে থাকার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন, এখন নেভেকে এটি বলতে পারবেন এবং দীর্ঘদিনের জীবনসঙ্গী ক্লার্ক গেফোর্ডকে ‘এখন তাদের বিয়ে করার সময় হয়েছে’ বলে জানাতে পারবেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...