গত কয়েক বছর ধরে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলন মনপ্রীত সিং। ২২ বছর বয়সী এই তরুণ ভারতের উত্তরপ্রদেশের মোরদাবাদের বাসিন্দা। তার স্বপ্ন ছিল উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডা যাওয়া। কারণ সেখানে অনেক শিখ স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেছেন। খবর আল জাজিরা
তবে বর্তমানে কানাডা ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছানোর কারণে তার সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। কানাডা যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে মনপ্রীত সিং এখন ইউরোপে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে এবং সেখানে সে শিক্ষা গ্রহণের চিন্তা করছে।
ওই তরুণ বলেন, ‘বিদেশে শিক্ষার জন্য কানাডা ছিল আমার পছন্দের দেশ। কারণ সেখানে আমাদের সম্প্রদায়ের অনেকে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এজন্য আমি আমার বাবা মাকে রাজিও করেছিলাম। তবে বর্তমান ভারত ও কানাডার মধ্যে উত্তজনাকর পরিস্থিতির কারণে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।’
মনপ্রীত সিংয়ের বাবা ইন্দ্রারজিত সিং আল জাজিরাকে বলেন, ‘তার সন্তানের নিরাপত্তা সবার আগে। আমরা চাই আমাদের সন্তান ভালো শিক্ষা পাক। এজন্য আমরা তার কানাডা যাওয়ার ক্ষেত্রে রাজিও ছিলাম। কিন্তু ভারত ও কানাডার মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের পুনরায় চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। এজন্য আমি তাকে নিরাপদ কোনো দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
মনপ্রীত সিংয়ের মতো ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যে বিশেষ করে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার অনেক ছাত্র উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। তবে গত বছর হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাদের কানাডা যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিতে হচ্ছে। হারদীপ সিং নিজ্জার কানাডিয়ান নাগরিক। তিনি ভারতে শিখদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন আন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা। যেটি খালিস্তান আন্দোলন নামে পরিচিত।
গত বছরের জুন মাসে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়াতে নিজ্জারকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় দুই বন্দুকধারী গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় অটোয়া ভারতকে দায়ী করে। এমনকি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে শিখ নেতাদের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো এবং সহিংসতার পেছনে তাকে দায়ী করেছে কানাডা।
রাজনৈতিক উত্তজনার কারণে দুই দেশের খারাপ সম্পর্কের ফলে হাজার হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষাগ্রহণে কানাডা যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা এখন হতাশায় পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ অবস্থার প্রভাব পড়েছে এডুকেশন এবং ইমিগ্রেশন পরামর্শ কেন্দ্রগুলোতেও। কারণ কানাডায় যেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের কাজ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ রুপি নিয়ে থাকে এবং আবেদন থেকে শুরু করে কাগজপত্র সংহের যাবতীয় কাজ তারা করে থাকে।