অক্টোবর ১৬, ২০২৪

বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর রহস্যের জট খুলতে চান তার মেয়ে সামিরা তানজিম চৌধুরী। হারিছ চৌধুরীর পরিচয় প্রমাণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা, মৃত্যু সনদসহ যথাযথ সম্মানের সাথে দাফন আবেদন করে রিটের প্রেক্ষিতে তার কবর থেকে দেহাবশেষ সংগ্রহ করা হয়েছে।

আজ বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকালে সাভারের বিরুলিয়া এলাকার জামিনে খাতামুন নবীঈনের জামিয়া খাতামুন কবরস্থান থেকে হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ সংগ্রহ করা হয়। যদিও এই কবরস্থানে তাকে মাহামুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়েছিল। এর আগে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ৮ অক্টোবর হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ কবর থেকে সংগ্রহ করার জন্য এসএম রাসেল ইসলাম নুরকে ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে নিয়োগ করা হয়।

দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট এসএম রাসেল ইসলাম নুর বলেন, হারিছ চৌধুরীর কবর থেকে তার দেহাবশেষ উত্তোলনের জন্য আদালত তাকে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ করেছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ সকালে মাহামুদুর রহমান নামে দাফন করা একটি কবর থেকে দেহাবশেষ সংগ্রহ করা হয়েছে৷ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে আদালতের নির্দেশনা পালন করেছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি জামায়াত সরকারের সময় আলোচিত চরিত্র হারিছ চৌধুরী। প্রচণ্ড প্রতাপশালী ও ক্ষমতাধর হারিছ ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব। ওয়ান এলেভেনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি হারিছ চৌধুরীকে। তবে প্রায় বছর খানেক আগে হঠাৎ করেই আলোচনায় আসে হারিছ চৌধুরীর নাম। গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয় হারিছ চৌধুরী পরিচয় গোপন করে থাকতেন রাজধানীর পান্থপথের একটি বাসায়। মারা যান ঢাকাতেই। তার মরদেহ বড় একটি ডোনেশনের বিনিময়ে দাফন করা হয় সাভারের জামিনে খাতামুন নবীঈনের জামিয়া খাতামুন কবরস্থানে। তবে তাকে মাহামুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়। তাই বাবার পরিচয় শনাক্তে মেয়ে সামিরা তানজিম চৌধুরী হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে আজ সেই কবর থেকে দেহাবশেষ কিংবা মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট।

মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিম সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন। পিটিশনে পিতা হারিছ চৌধুরীকে জামিনে খাতামুন নবীঈনের জামিয়া খাতামুন কবরস্থানে মাহামুদুর রহমান নামে দাফন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। ফলে হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ কবর থেকে উত্তোলন করে তার পরিচয় প্রমাণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা, মৃত্যু সনদ, ইন্টারপোলের রেড নোটিস থেকে নাম মুছে ফেলা এবং নিজ জেলায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যথাযথ সম্মানের সাথে দাফন করার জন্য আবেদন করেন তার মেয়ে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরীর লাশ কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মাহবুবুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিম চৌধুরীর রিট আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *