নভেম্বর ২১, ২০২৪

পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) নামে একটি আঞ্চলিক জোটের বৈঠকে অংশ নিতে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দেশটিতে পৌঁছাবেন তিনি।

সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের ডিনারে যোগ দেবেন জয়শঙ্কর। এর মাধ্যমে গত প্রায় ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তানে যাচ্ছেন তিনি।

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সব ঠিক থাকলে ২০১৫ সালের পর কোনও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার পাকিস্তানে যাবেন। এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে জয়শঙ্কর আজই ইসলামাবাদে পৌঁছাবেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আয়োজিত নৈশভোজ এড়ানোর কোনও সুযোগ নেই জয়শঙ্করের।

শেহবাজ শরিফ ছাড়াও ওই নৈশভোজে থাকবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার-ও। ক্যালেন্ডারের হিসেবে দু’দিনের সফর হলেও, আসলে ২৪ ঘণ্টারও কম সময় পাকিস্তানে থাকবেন জয়শঙ্কর।

ভারতের কূটনৈতিক মহলের মতে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে পাকিস্তানে পাঠানো মোদি সরকারের তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি একটি বক্তৃতায় জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, যেকোনও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মতোই, পাকিস্তানের সঙ্গে সহজ সম্পর্ক ভারত অবশ্যই চায়। কিন্তু তা আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস থেকে চোখ ফিরিয়ে নয়।

নয়াদিল্লির বক্তব্য, এসসিও-র প্রতি ভারতের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে তাকে সবচেয়ে বেশি তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে এই সিদ্ধান্তে। জয়শঙ্করকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে নয়াদিল্লি এই বার্তাটাই দিতে চাইছে, দ্বিপাক্ষিক সংঘাতের ঊর্ধ্বে উঠে তারা বহুপাক্ষিক আলোচনা এবং কূটনীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

পাশাপাশি, অস্থির ও অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাকিস্তান সফর একটি সার্বিক ইতিবাচক বার্তা বহন করবে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। জয়শঙ্করের দাবি, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি না। এসসিও-র একনিষ্ঠ সদস্য হিসেবেই যাচ্ছি।

ভারত আগেই জানিয়েছিল, জয়শঙ্করের এই সফরের সঙ্গে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কোনও সম্পর্ক নেই। গত রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, “ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কোনও ধরনের বৈঠকের অনুরোধ পাইনি। আমরাও তেমন কোনও আবেদন করিনি। তবে প্রোটোকল অনুযায়ী সব দেশের নেতাদের মতোই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও স্বাগত জানানো হবে।”

এদিকে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানী ইসলামাবাদে লকডাউন জারি করেছে পাকিস্তানের সরকার। সেই সঙ্গে ইসলামাবাদ এবং পার্শ্ববর্তী রাওয়ালপিন্ডিতে তিনদিনের সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচটি জেলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।

এর আগে ২০১৫ সালে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আফগানিস্তান নিয়ে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন। তার পরের বছর সার্ক-ভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছিল পাকিস্তানে, আর সেটিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।

সেটাই ছিল শেষ বার পাকিস্তানের মাটিতে কোনও বহুপাক্ষিক সম্মেলনে ভারতের যোগদান।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...