অক্টোবর ১৬, ২০২৪

তিন পার্বত্য জেলায় ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করার সরকারি নির্দেশনার কারণে পর্যটক শূন্য রাঙামাটি। এতে হতাশ ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের ধরণা, এই মাসে এতে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ কোটি টাকার ক্ষতি হবে।

ব্যবসায়ী জানান, হ্রদ, পাহাড় আর মেঘের এমন মিতালী উপভোগে ভ্রমণ পিপাসুদের বরাবরই পছন্দের শীর্ষে থাকে রাঙামাটি। তাই ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকরা ভিড় করে এ জেলায়। নগর জীবনের ক্লান্তি দূর করতে সবুজ প্রকৃতি ও ঝর্ণার জলে সজীব করে নেয় নিজেদের। তবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটিতে চিত্র একেবারেই ভিন্ন। সম্প্রতি কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে পাহাড় ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে প্রশাসন। ফলে এ বছর সাজেক, রাঙামাটির আশেপাশের হোটেল, কটেজ, হাউজবোট, টেক্সটাইল মার্কেটগুলোও তাদের প্রস্তুতি নিলেও প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে হতাশ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাট্রিজের তথ্য মতে, রাঙামাটিতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাতের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। মেঘের রাজ্য সাজেক, সুবলং ঝর্ণাসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে কোথাও তেমন নেই পর্যটক। শীত মৌসুমের শুরুতে এমন সিদ্ধান্ত রাঙামাটি পর্যটন শিল্পে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মত ব্যবসায়ীদের। এতে পুঁজি হারানো শঙ্কায় আছেন তারা। দ্রুতই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি তাদের।

 

ব্যবসায়ীদের হিসেবে শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটিতে হোটেল-মোটেল বুকিং করেও পরে বাতিল করতে হয়। শুধু হোটেল মোটেল নয়, ট্যুরিস্ট বোট, হাউজ বোট ও কটেজগুলো নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছিলো। তবে এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে ব্যবসায়ীদের। শীত মৌসুমের পূর্বে এমন অবস্থায় কেউ কেউ ব্যবসা বন্ধের চিন্তার কথাও জানান।

গত মাসের ১৮ তারিখ থেকে পাহাড়ে সহিংসতার জেরে সাজেকে তিন দফায় সাজেকে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়। যা পরবর্তিতে পাহাড়ের সার্বিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে তিন পার্বত্য জেলায় আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

হাউজ বোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বার্গি লেকের পরিচালক বাপ্পী তঞ্চঙ্গ্যা জানান, শুধু নিরাপত্তার জন্য পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভেবে দেখা দরকার। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যদি এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকে তাহলে কোটি কোটি টাকা লোকসান হবে। সূত্র নিউজ 24

সাজেকে রিসোর্ট মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিজয় ত্রিপুরা জানান, প্রতি শুক্র-শনিবার প্রায় ২ দুই থেকে আড়াই হাজার পর্যটক সাজেক বেড়াতে যায়। সরকারি ছুটি দিনে তা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই সময়ে সাজেকে ভ্রমণের নিরুৎসাহিত করায় পর্যটক শূন্য সাজেক। সব রিসোর্ট মালিকরা বেকার সময় কাটাচ্ছেন। কর্মচারীদের এই মাসের বেতন দেয়াও সম্ভব হবে না।

রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাট্রিজের সহ-সভাপতি আলী বাবর জানান, শুধু রাঙামাটি শহরে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা। এর মূল কারণ পর্যটক না আসায়। রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় মানুষ পর্যটন ব্যবসার ওপর নির্ভর করে টিকে আছে। এই ধারা যদি পুরো মাস চলে তাহলে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বে ব্যবসায়ীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়েল উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতি বলছে অপতত পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ রাখা প্রয়োজন তাই বন্ধ রাখা রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় করে পরে খুলে দেয়া হবে। জনগণের আস্থা অর্জনে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা উন্নতি করতে প্রশাসন কাজ করছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *