অক্টোবর ৬, ২০২৪

সর্বশেষ হিসাব বছরে লভ্যাংশ ঘোষণা করার পর তা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ না করায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৪টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে কোম্পানিগুলোকে দ্রুত শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ বিতরণ করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

কোম্পানিগুলো হলো- লুব-রেফ বাংলাদেশ লিমিটেড, এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ভিএফএস থ্রেড ডাইং লিমিটেড, ফরচুন সুজ লিমিটেড, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন লিমিটেড, দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বিচ হ্যাচারি লিমিটেড, অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, লিবরা ইনফিউশন লিমিটেড, প্যাসিফিক ডেনিমস লিমিটেড এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনের মিটিং রুমে ১৪টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভা বিএসইসি এসব নির্দেশনা দিয়েছে।

এদিকে সভায় কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে বিএসইসিকে জানিয়েছে, তহবিল কম থাকার কারণে কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডারদের ঘোষণা করা লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারেনি। তবে কোম্পানিগুলোর এ বক্তব্য যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেনি কমিশন। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ বিতরণ না করায় কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি। এছাড়া কোম্পানিগুলো যতদ্রুত সময় শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ বিতরণ করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ হিসাব বছরে উল্লিখিত ১৪টি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করে। কিন্তু লভ্যাংশ ঘোষণা করার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো তা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ করেনি। ফলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি কিছু কোম্পানি ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের প্রদান করার কারণে ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে উন্নীত করা হয়েছে। তবে কী কারণে কোম্পানিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে প্রদান করেনি, সভায় তার ব্যাখ্যা শুনেছে কমিশন। একইসঙ্গে কোম্পানিগুলোকে দ্রুত লভ্যাংশ বিতরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরেও যদি কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি পর্ষদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে কমিশন। এই বার্তা দিতেই ১৪টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তলব করা হয়েছে।

যেসব কোম্পানি যথাসময়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করে না, সেসব কোম্পানি বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল। কোম্পানিগুলো সম্প্রতি সময়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান না করার কারণে পুঁজিবাজারে বেশ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে কঠোর অবস্থান গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।

বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আজকের সভায় কোম্পানিগুলো যথাসময়ে কেন শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারেনি তা জানতে চাওয়া হয়েছে। কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, তাদের তহবিল কম থাকার কারণে লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারেনি। তাই কোম্পানিগুলোকে যতদ্রুত সম্ভব শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ বিতরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত লভ্যাংশ বিতরণে ব্যর্থ হলে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেবে বিএসইসি।

তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এবং পুঁজিবাজারের সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশন খুবই আন্তরিকভাবে কাজ করছি। আগামীতে অতিদ্রুত স্বল্প সময়ের মধ্যে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার করা হবে। এর ফলে আগামীতে আমরা শিগগিরই উন্নত পুঁজিবাজার দেখতে পাব বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *