নভেম্বর ২৫, ২০২৪

ব্যাংক খাতের চাঁদাবাজ নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিচার চান সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা। তারা বলছেন, এতোদিন অনুদানের নামে ব্যাংক-মুনাফার বড় একটি অংশ তুলে দেয়া হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। এর ফলে ব্যাংকের শেয়ার কিনে লভ্যাংশ বঞ্চিত হয়েছেন তারা। আর ব্যাংকাররা বলছেন, নজরুল ইসলাম মজুমদারের জবরদস্তির কারণেই চাঁদা দিতে বাধ্য থাকতেন তারা।

সিএসআরের নামে গত ৯ বছরে ব্যাংকগুলো থেকে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকা নিয়েছেন শেখ হাসিনা।

নজরুল ইসলাম মজুমদারের হুকুমের বাইরে যাওয়ার সাহস ছিল না দেশের কোনো ব্যাংকের। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে গোটা ব্যাংকিং খাতেই নির্দয়ভাবে চাঁদাবাজি করতেন তিনি। ব্যাংকের এমডি-চেয়ারম্যানদের গণভবনে ডেকে নিয়ে আদায় করতেন কোটি কোটি টাকার চেক।

প্রাপ্ত তথ্য বলছেন, ২০১৫ থেকে ২৩ সাল পর্যন্ত ৯ বছরেই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ব্যাংকগুলো জমা দিয়েছে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থ কোথায় খরচ হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই।

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হতো, সেখানে বিপুল অংকের চেক জমা দিতে হতো। এভাবে কত টাকা উঠেছে তা আমি জানিনা।”

কথিত সিএসআরের নামে শেখ হাসিনাকে দেয়া এই অর্থের প্রকৃত মালিক ব্যাংকগুলোর হাজার হাজার শেয়ারহোল্ডার। কিন্তু নজরুল ইসলাম মজুমদার শেয়ারহোল্ডারদের কথা ভাবেননি। বঞ্চিত করেছেন তাদের।

শেয়ারহোল্ডাররা বলেন, ত্রাণ তহবিলে যে টাকাগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো জনগণের ও শেয়ারহোল্ডারদের। যেখানেই দেওয়া হয়েছে এগুলো ফেরত আনতে হবে। বোর্ডের মিটিং করে ১শ’-২শ’ কোটি টাকা দিয়ে দিবে এটা শেয়ারহোল্ডারদের মানার কথা নয়।”

ব্যাংকাররা বলছেন, নজরুল ইসলাম মজুমদারের চাপে বাধ্য হয়েই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে অর্থ দিয়েছেন তারা। নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। নজরুল ইসলাম মজুমদারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কথা বলা যেত না।

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “শেখ হাসিনা ফুটবল টুর্নামেন্টেও আমাদের টাকা দিতে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে একজন ম্যানেজিং ডিরেক্টর কথা বলেছিলেন তাতে ওনার অনেক সমস্যা হয়েছিল।”

শেখ হাসিনাকে খুশি রেখে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়াই ছিল এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও নাসা গ্রুপের মালিক নজরুল ইসলাম মজুমদারের আসল উদ্দেশ্য।

বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পাচার করার অভিযোগ রয়েছে নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে। বিদেশে গড় তুলেছেন বিপুল সম্পদ।

ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন বলেন, “অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কোনো নাগরিক ভয়েস রেইজ করতে পারতো না। এরকম একজন ছিলেন নাসা গ্রুপের কর্ণধার ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।”

ব্যাংক খাতের মাফিয়াদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। সূত্র একুশে টিভি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...