নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বিএসইজেড) কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল নামে পরিচিত অর্থনৈতিক অঞ্চলটির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
অর্থনৈতিক অঞ্চলটি সম্পূর্ণরুপে চালু হলে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং এটি প্রাথমিকভাবে এক লাখেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। জাপানের জন্য নিবেদিত একটি ইজেড (অর্থনৈতিক অঞ্চল) প্রতিষ্ঠার ভিশন ২০১৪ সালে শুরু হয়েছিল, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফর করেছিলেন।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ২০১৬ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার উদ্যোগ নেয়। পরে ২০১৯ সালে জাপানের সুমিতোমো কর্পোরেশন বিএসইজেড বিকাশের জন্য বেজা-এর সাথে চুক্তি করে। সিঙ্গার-এর মতো স্বনামধন্য সংস্থাগুলি ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেছে এবং জার্মান সংস্থা রুডলফের সাথে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর আরও দুই জাপানি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে, যেখানে আরও ৩০টি জাপানি ফার্ম এবং বিভিন্ন দেশের ১০টি ফার্ম ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সিঙ্গার ৭৯ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক বিনিয়োগ করবে, অন্যদিকে রাসায়নিক কোম্পানি রুডলফ ৭ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক বিনিয়োগ করবে।
জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল-২ স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য নিবেদিত আরেকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এবং চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থাকে (জাইকা) অনুরোধ করেছে সরকার।
দেশব্যাপী পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭৭ জন বিনিয়োগকারী ৮,১৬,৫৪১ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২২,১৭৩.১৭৭ মিলিয়ন ডলারের সামগ্রিক বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন। এই পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হল মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর (বিএসএমএসএন), জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ (ধলঘাটা) এবং শ্রীহট্টো অর্থনৈতিক অঞ্চল। এছাড়া, প্রায় ৩৫,০০০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ইতিমধ্যে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।