কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর পানি গত দুদিন ধরে কিছুটা কমে আবারও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। যার ফলে জেলার ৯ উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর গবাদিপশুর তীব্র খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চলমান থাকলে গো খাদ্য সংকট নিয়ে দুঃশ্চিন্তা আছে বানভাসিরা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, নদ-নদীর পানি সমতলে কিছুটা হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩৪ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি ৭ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি ৩ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ১০ দিন ধরে জেলার ৯ উপজেলার দুই লাখ পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। রাস্তাঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কয়েকদিনের বন্যায় নাগেশ্বরী উপজেলার ২ টি বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। চর দ্বীপ চর ও নিম্নাঞ্চলের মানুষের ঘরে চাল ডাল থাকার পরেও রান্না করে খেতে পারছেন না। ফলে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন বানভাসি মানুষগুলো।
অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে উঁচু স্থানে অবস্থান করছে। উপায় না পেয়ে অনেকের নৌকার ভেতর রাত কাটছে। এমন দুর্ভোগে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগিতার আশা করছেন বানভাসিরা।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার আফরোজা বেগম বলেন, টানা ১০ দিন ধরে পানিবন্দি। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি। কাজ-কাম নাই, খাওয়ার কষ্ট, থাকার কষ্ট।
ওই ইউনিয়নের মন্ডল পাড়া এলাকার শাহাজাহান আলী বলেন, বাড়ির চারিদিকে পানি। গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ি থেকে বাইর হতে পারছি না। কাজকর্মও নাই, খাওয়া-দাওয়ারও খুব কষ্ট।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার বলেন, জেলার বন্যা কবলিতদের জন্য বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪২ টন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৩ হাজার ১২০ প্যাকেট শুকনো খাবার ৯ উপজেলায় বিতরণ চলমান।