নভেম্বর ২৪, ২০২৪

রাষ্ট্রীয় সফরে আগামীকাল শুক্রবার দিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। একইভাবে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার গঠনের পর বাংলাদেশের সঙ্গেই প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। এই বৈঠক থেকে আসবে সম্পর্ককে আরও গভীর করার দিকনির্দেশনা।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই দ্বিপক্ষীয় সফর উপলক্ষে শুক্র ও শনিবার নয়াদিল্লি অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গী দল।

শনিবার সকালে শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এরপর তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করবেন। একই দিনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক উপলক্ষে হায়দ্রাবাদ হাউসে যাবেন শেখ হাসিনা। সেখানে দুই নেতার একান্ত বৈঠক হবে। এ ছাড়া প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা এবং দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি বিনিময় এবং দুই নেতার প্রেস বিবৃতির আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হবে। সফরের শুরুর দিনে শেখ হাসিনার আবাসস্থলে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। শনিবার বিকেলে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখারের সঙ্গে তাঁর সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাক্ষাৎ করবেন। উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে শেখ হাসিনা পুনরায় রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা শুক্রবার দুপুর ২টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে পালাম বিমানবন্দরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। সফর শেষে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ত্যাগ করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে ১২ থেকে ১৪টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের কথা। এর মধ্যে যেসব চুক্তি বা সমঝোতার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেগুলোর কয়েকটি আবারও নবায়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক সামনে রেখে সফরের বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত করতে দুই পক্ষ কাজ করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বৈঠকে বেশি গুরুত্ব পাবে নিরাপত্তার বিষয়টি। মিয়ানমার পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মনিপুরে সংকট, এ অঞ্চলে চীনের প্রভাবসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া বৈঠকে গুরুত্ব পাবে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা। দুই দেশেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, জ্বালানিসহ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কীভাবে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এ ঝুঁকি মোকাবিলা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা যায় সে বিষয়টি আলোচনায় থাকবে। এ কারণে ভারতের ঋণচুক্তি বাস্তবায়নে নতুন রূপরেখা চুক্তি বা বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সমঝোতা স্মারক সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, জ্বালানি, নতুন প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা হবে। এ ছাড়া মহাকাশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল অর্থনীতির মতো বিষয়গুলো সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও ঋণ সহায়তার মতো অমীমাংসিত বিষয়গুলো তুলে ধরা

হবে।

 

 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...