ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

কবিতা আবৃত্তি ও গানে গানে বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণপুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করল ভারতীয় হাইকমিশন অব বাংলাদেশ। কবিগুরুর ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আয়োজিত এক বনার্ঢ্য আয়োজনে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দেশের কবি ও সঙ্গীত শিল্পী এবং সাংস্কৃতিকমণা মানুষেরা। এই আয়োজনের উপস্থিতি সবাই বাঙালির সংস্কৃতি ও মননে রবীন্দ্রনাথের অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে উল্লেখ করেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডি ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আয়োজিত রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদক বিজয়ী ও ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কার জয়ী প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সুরের ধারা শিল্পীবৃন্দের সঙ্গে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা মোট ১০টি বেশি রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন। বরিষ ধারা মাঝে, সখা মোরে বেঁধে রেখ, স্বপন পাড়ের ডাক শুনেছি, আমার মল্লিকা বনের মতো জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন তিনি। এই সময়ে নৃত্যও পরিবেশনা করা হয়। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা শান্তি নিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিষ্য কনিকা বন্দোপ্যাধায়ের কাছে সঙ্গীত শিখেছিলেন। অনুষ্ঠানে বন্যা কনিকা বন্দোপ্যাধায়ের সুরে গানগুলো পরিবেশন করেন। বন্যা ও তাঁর সঙ্গীত দলের পরিবেশনায় উপস্থিত দর্শক ও শ্রোতারা মুগ্ধ হয়ে পড়েন। দর্শক শ্রোতারাও এই সময়ে সুরে সুরে গান পরিবেশন করেন।
সুরের ধারার শিল্পীবৃন্দের সঙ্গীত পরিবেশনার আগে আবৃত্তি করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত আবৃত্তি শিল্পী রূপা চক্রবর্তী। রবীন্দ্র জয়ন্তীতে আয়োজিত সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় রূপা চক্রবর্তী রবি ঠাকুরের জনিপ্রয় বেশ কয়েকটি কবিতা ও একটি গদ্য আবৃত্তি করে শোনান। রূপা চক্রবর্তীর আবৃত্তি দর্শক শ্রোতারা মনপ্রাণে উপভোগ করেন।

বিকেল পাঁচটায় অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উপস্থিতিদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে বিভিন্ন বয়সের কবিরা অংশ নেন। সম্মেলনে প্রায় ২০ জন কবিতা রবীন্দ্রনাথকে স্মারণ করে রবি ঠাকুরের ও স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।
কবি সম্মেলনের শুরুতে উপস্থাপিকা নারগিস সুলতানা অন্তর মম বিকশিত কর অন্তর কর হে কবিতা দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন। এই সময়ে তিনি জানান, এবার ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইংরেজী মে মাসের ৭ তারিখকে কবিগুরুর জন্মদিন হিসেবে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করছে। বরীন্দ্রজয়ন্ত অনুষ্ঠানে কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানানো এবং বিশেষভাবে স্মরণ করতে কবিরা কবিতা পাঠ করেন। সেই সঙ্গে বাঙলা সাহিত্য, গাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কবিগুরুর মহিমা বর্ণনা করেন।

সম্মেলনের শুরুতে কবিতা পাঠ করেন দিলারা হাফিজ, হালিম আজাদ, রঞ্জনা বিশ্বাস, নকিব বকশি, শাহেদ কায়েস, শাকিলা আক্তার, ফজলুর রহমান, রূপালী বড়ুয়া, জন রবি রোজারিও, মাহফুজ রিপন, জুবায়ের মিলন, মিনু গরটি কোরাইয়া, শাকিলা পারভীন, রুনি হক, সাফিয়া খন্দকার রেখা, ইমরান মাহফুজ, ফারুক ফারদিন, খোকন কোরাইয়া, মাহমুদুল হাকিম তানভীর, রাসেল আশিকী, বিথি রহমান, সমীর অধিকারী ও দিপালি গোমেজের মতো কবিরা। এই সময়ে কেউ কেউ রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা জানিয়ে রবি ঠাকুরের কবিতা ও নিজের লেখা কবিতা পড়ে শোনান।

সবমিলে রবি ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে ইন্দিরাগান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নবীন ও প্রবীণের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল। সবাই কবিগুরুর বন্দনা, গান ও কবিতায় পুরোটা সময় পার করেছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...