ধারাবাহিকভাবে কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এমন পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স বাড়াতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো ধরনের চার্জ ছাড়া রেমিট্যান্স পাঠানোর সুবিধাসহ একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স আহরণ বাড়বে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে—বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করার পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়নে অর্থায়নের সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স প্রেরণে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ প্রভৃতি।
এ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, চলতি বছরের অক্টোবরে আগের মাস সেপ্টেম্বরে তুলনায় রেমিট্যান্স কিছুটা কম এসেছে। তবে, চলতি বছরের প্রথম ৪ মাসে গত বছরের তুলনায় রেমিট্যান্স ২.০৩ শতাংশ বেশি এসেছে। রেমিট্যান্স একটি ফ্লো। মাসভিত্তিক এ প্রবাহ হ্রাস-বৃদ্ধি হতে পারে। মৌসুমি প্রভাবেও বিশেষ বিশেষ অবস্থায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, প্রবাসী আয় বাড়াতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা করছি, আগামীতে রেমিট্যান্স আহরণ ক্রমান্বয়ে বাড়বে।
নানা উদ্যোগ নিয়েও রেমিট্যান্স বাড়াতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অক্টোবরে ১৫২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা, যা গত ৮ সাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১৪৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ মার্কিন ডলার, আগস্টে এসেছে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার এবং সেপ্টেম্বরে এসেছে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ওই অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার, আগস্টে ১৮১ কোটি ১ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ, ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ, জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ, মার্চে ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ, এপ্রিলে ২০১ কোটি ৮ লাখ, মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ এবং জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৪ কোটি মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।