নভেম্বর ২৮, ২০২৪

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের ডলারে ঘাটতি এসেছে, পেমেন্টে অসুবিধা হচ্ছে। সেক্ষত্রে চায়নার ইউয়ান ও ইন্ডিয়ার রুপিতে যদি আমরা পেমেন্ট করতে পারি তাহলে ডলার রিজার্ভের উপর চাপ কম হবে। আমাদের জন্য ভালো সংবাদ হলো, আমাদের ডলারের উপর প্রেসার কমানোর জন্য আমাদের প্রতিবেশী দুই দেশ ইন্ডিয়া ও চায়না আলোচনা করছে। কিন্তু প্রক্রিয়াটা জটিল।

এই দুটি দেশের সাথে আমরা মোটামুটি এমপোর্ট করি। অল্প এক্সপোর্ট করি। গত ১ বছরে ২৪ বিলিয়ন ডলার ইমপোর্ট করেছি। আর আমরা ১ মিলিয়নের মতো এক্সপোর্ট করেছি।

আজ শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইউয়ান-টাকায় ট্রেড ও বাংলাদেশের ডলার চ্যালেঞ্জ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সাবেক মন্ত্রী বলেন, ইউয়ান-টাকা, রুপি টাকা এই বিষয়গুলো এসেছে কারণ গত দুই বছর আগে সারা পৃথিবীতে অনিচ্ছয়তা দেখলাম। ইউক্রেন যুদ্ধের পরপর কোন দেশকে জিজ্ঞেস না করে যুক্তরাষ্ট্র সুইফট বন্ধ করে দিলো। যেটা আমাদের ট্রান্সজিকশনের মাধ্যম। এর ফলে আমরা অনেক কষ্ট করেছি। বড় রকমের আঘাত আমরা পেয়েছি।

আমাদের ডলার ট্রান্সজিকশনে হঠাৎ করে ভাটা পড়লো। অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডলার ছাড়া অন্য কোন এক্সচেঞ্জে আমরা বাণিজ্য করতে পারি কিনা? এটা রাজনৈতিক ইস্যু। কতোটা বাস্তবায়ন হবে জানি না। আমরা যদি এসব ট্রান্সজিকশনে যাই তাহলে দেশের সরকার ও ব্যবসায়ীদের কতটুকু লাভ হবে? এটাও ভাবতে হবে। স্বল্পকালীন সমস্যা হয়তো আমরা মোকাবিলা করতে পারবো। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাবের কথাও ভাবতে হবে।

ড. এ কে মোমেন বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ ধরনের ম্যাকানিজম তৈরি করতে হবে৷ এ বিষয়টি নিয়ে অনেক সতর্ক থাকতে হবে৷ আজ যে অবস্থা আছে আগামীতে সেই অবস্থা থাকবে কিনা? একটা নিউক্লিয়ার যুদ্ধ হলে ডলার পেপার হয়ে যাবে। আমরা ভ্যালু হারাবো। যে হারে পৃথিবী চলছে আগের চাইতে সতর্ক থাকতে হবে। এখন থেকে বিকল্প চিন্তার সুযোগ এসছে। হঠাৎ করে ঝামেলা আসলে আমরা নিজেদের ম্যানেজ করতে পারবো না৷ মে বি আমাদের এই প্রাকটিসটা শুরু করা উচিত। তাহলে দুর্ঘটনা শুরু হলে আমরা প্রস্তুত থাকতে পারি।

বিকল্প ব্যবস্থার কথা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, তবে কোন কোন দেশ বাটার ট্রেডিং করে, আমরাও করেছি। যেমন ইরান। এটার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তাদের উপর এতো স্যাংশনের পরও তারা বাটার ট্রেডিং করেছে। তাতে রিজার্ভের উপর চাপ কম হবে। আমরা অনেক ধরনের সক্ষমতা নিয়েই আলাপ করতে পারি। কারণ এটা গ্রহণযোগ্য কোন সিস্টেম না। গ্রহণযোগ্য সিস্টেম হলো ডলার। নতুন কিছু করতে গেলে কী ধরনের মেকানিজম করা দরকার সে বিষয়টি এখনি ভাবার সময়৷ এটা বাস্তবায়ন করতে গেলে কী ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হবে সেটাও ভাবতে হবে।

এডুকেশন রিসার্চ ডেভলপমেন্ট ফোরাম (ইআরডিএফ) আয়োজিত প্রোগ্রামে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. মিজানুর রহমানসহ প্রমুখ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...