বিজ রিপোর্ট
সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ সবচেয়ে নিরাপদ মনে করা হয়। সুদের হার হ্রাস সহ বিভিন্ন শর্তের কারণে সঞ্চয়পত্রে আগ্রহ কমছে বিনিয়োগকারীদের। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৭৩১ কোটি ৭৭ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিলো ১১ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক, ডাকঘর ও অন্যান্য সঞ্চয় অফিস থেকে ৩৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর আগের মাস আগস্টে মাত্র ৮ কোটি টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৩৯৩ কোটি ১১ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেবে সরকার। তবে নতুন অর্থবছরে ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে গ্রাহকের আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। এতে এ খাতের বিক্রি কমে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সঞ্চয়পত্রে সুদ কম দেওয়ার পরিকল্পনা করে সরকার। সে জন্য বিক্রি কমাতে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। এরপরও বিক্রি বাড়ছিল। তবে গত কয়েক মাস ধরে বিক্রি বেশ কমেছে। এখন বিক্রি আরও তলানিতে নেমে এসেছে।
এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। এর মধ্যে গ্রাহকদের মূল টাকা (বিনিয়োগ) ও মুনাফা (সুদ) বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৮৮ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। যার মধ্যে সরকারকে সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর এ খাতে সরকারের নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৯১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৫২ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম।
জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ৪২ হাজার কোটি টাকা নিট ঋণ নিয়েছিল সরকার। যার পরিমাণ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র খাতের নিট ঋণ ছিল ৪৯ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকার ঋণ নিয়েছিল ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা এছাড়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিয়েছিল ৫২ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা।