নভেম্বর ১৬, ২০২৪

দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে খলচরিত্রে সিনেমায় অভিনয় করে যাচ্ছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মিশা সওদাগর। এখনো তিনি অভিনয়ে নিয়মিত। বর্তমান ব্যস্ততা ও সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আজকের ‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রেক্ষাগৃহে শো চলাকালীন দর্শকের কাছ থেকে মন্দ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য গালমন্দ শুনেছেন। এই বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন?

এটাই কিন্তু দর্শকের ভালোবাসা। কারণ সিনেমাহল থেকে বেরিয়ে দর্শক একটা কথাই বলেন, ‘কী দারুণ অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর’। অভিনেতা হিসাবে এটাই কিন্তু আমার প্রাপ্তি। কোথাও গেলে দর্শক ভক্ত যখন আমাকে তাদের ভালোলাগার কথা প্রকাশ করেন, তখন আনন্দে বুকটা ভরে যায়।

একটি সিনেমায় আপনাকে পজিটিভ চরিত্রেও দেখা গেছে…

আমার বন্ধু বদিউল আলম খোকনের পরিচালনায় ‘নিঃশ্বাস আমার তুমি’ সিনেমায় আমি গ্রামের কৃষকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। এ সিনেমায় আমার একটা সংলাপ ‘বেহায়াপনা আপনাদের শখ, একটু সম্মান নিয়ে বাঁচতে চায় একজন কৃষক’ সেই সময় দর্শকের মধ্যে বেশ ভালোলাগার সৃষ্টি করেছিল। আমার মনে আছে এ চরিত্রে অভিনয়ের পর আমার সবচেয়ে প্রিয় অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক আমাকে ফোন করে অভিনয়ের প্রশংসা করে টানা ১১ মিনিটে আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন।

অভিনয় করতে করতে জীবনকে কতটুকু উপভোগ করেছেন?

সত্যি বলতে ক্যারিয়ার ফোকাস করতে গিয়ে জীবনটাকে সেভাবে উপভোগ করতে পারিনি। আমি মেধাবী নই, তবে খুব অ্যাক্টিভ একজন মানুষ। আমার গড গিফটেড মেধা নেই। কিন্তু আমি জানি ভালো করতে হলে, একটি অবস্থানে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে, অনুশীলনের মধ্যে থাকতে হবে। আমি সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষ আমাকে চেনেন, দর্শক সিনেমাতে আমাকে বারবার দেখতে চায়, সেই ভালোবাসার টানে আমি আমার পেশাকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছি। এই ভালোবাসা নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই।

আপনার অভিনীত সবচেয়ে প্রিয় সিনেমা কোনগুলো?

কোনটা রেখে কোনটা বলবো। আমার সব কাজই আমার কাছে প্রিয়। তবে বিশেষভাবে বলতে গেলে ‘আশা ভালোবাসা’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘প্রিয় তুমি’, ‘দানব’, ‘দুই নাম্বার’, ‘নূরা পাগলা’, ‘ল্যাংড়া মাসুদ’, ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’, ‘নিঃশ্বাস আমার তুমি’, ‘ধোকা’, ‘বীর’, ‘বস নাম্বার ওয়ান’ এসব নাম উলে­খ করতে হয়।

এ মুহূর্তে কয়টি সিনেমায় অভিনয় করছেন?

এ মুহূর্তে আমি নতুন ১১টি সিনেমাতে অভিনয় করছি। বর্তমানে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সানী সানোয়ারের ‘এশা মার্ডার’ সিনেমার শুটিং করছি। অন্য সিনেমাগুলো হচ্ছে সাইফ চন্দনের ‘ওয়াদা’, রায়হান খানের ‘পায়েল’, হাসিবুর রেজা কল্লোলের ‘কবি’, দেবাশীষ বিশ্বাসের ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’, মো. ইকবালের ‘বিট্রে’, ‘ডেড বডি’, কামরুজ্জামান রোমানের ‘লিপস্টিক’, বিপ্লব হায়দারের ‘আলী’, মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘ডার্ক ওয়ার্ল্ড’ ও রাজীব কুমার বিশ্বাসের ‘অপারেশন জ্যাকপট’।

পরিচালনায় কোনো আগ্রহ আছে?

সিনেমা পরিচালনা অনেক কঠিন। এটা আমি ভাবতেই পারি না। আমার দ্বারা সিনেমা পরিচালনা সম্ভব নয়। তবে সিনেমার বাইরে অন্যকিছু নিয়ে নির্মাতা হিসেবে একটু ভাবা যেতে পারে ভবিষ্যতে।

প্রযোজনাও করেছিলেন একসময়…

আমার ‘সওদাগর প্রোডাকসন হাউজ’ থেকে ‘প্রতিবাদী মাস্টার’ নামে একটি সিনেমা প্রযোজনা করেছি। মোট ৫৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। আমার ২৬ লাখ টাকা লস হয়েছে। এটা সত্যি, শুধু প্রযোজনা করলেই হয় না, পুরো প্রোডাকসনে সময় দিতে হয়। নাহলে সিনেমা প্রযোজনা করে লাভ করা কঠিন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...