ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও তিন হাজারের বেশি।
এই পরিস্থিতিতে গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ১১ হাজার ৭৮ জনে পৌঁছেছে বলে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা গাজা শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ৪ হাজার ৫০৬ জন। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ৩ হাজার ২৭ জন নারী এবং ৬৭৮ জন বৃদ্ধ রয়েছেন। ইসরায়েলি আগ্রাসনে আহত হয়েছেন আরও ২৭ হাজার ৪৯০ জন।’
তিনি বলেন, ইসরায়েলি হামলায় দেড় হাজার শিশুসহ ২ হাজার ৭০০ জন লোক এখনও বিধ্বস্ত বহু ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন বলে জানা গেছে।
আশরাফ আল-কুদরা আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসনে ১৯৮ জন চিকিৎসক মারা গেছেন এবং ৫৩টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েল ১৩৫টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে হামলা করেছে এবং তাদের হামলায় ২১টি হাসপাতাল ও ৪৭টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবার বন্ধ হয়ে গেছে।’
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের নিহতের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ভারত সফরে সাংবাদিকদের বলেন: ‘(ইসরায়েলি হামলায়) অনেক বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; গত সপ্তাহে অনেক বেশি মানুষ এই হামলার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন।’
ব্লিংকেনের এই মন্তব্যকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিকদের দুর্দশার বিষয়ে তার সবচেয়ে জোরালো মন্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
একইসঙ্গে গত ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধও আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল।