ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) গণভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সোমবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। পরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি স্যাটেলাইট ও উড়োজাহাজের বিষয়ে এয়ারবাসের সঙ্গে দুটি এবং স্থানীয় সরকার প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য একটি সম্মতিপত্র সই হবে।
বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস ব্রিফিং করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের হওয়ার আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট সেখানে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে সই করবেন।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ২০২১ সালে শেখ হাসিনার সফরে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স একটি প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক সই করে। এ সংক্রান্ত কিছু আলোচনায় গুরুত্ব থাকবে এবার। কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ারও কথা রয়েছে। এয়ারবাস থেকে একটি স্যাটেলাইট কেনার বিষয়ে একটি চুক্তি হতে পারে। একই কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কেনার বিষয়ে যে কথা উঠেছে সে বিষয়ে কিছু অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফ্রান্সের সাহায্য সংস্থা এএফডি থেকে ২০ কোটি ডলার সহায়তা নিয়েও একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
এছাড়া বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়তা, প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ রোহিঙ্গা ইস্যু দুই সরকারপ্রধানের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৈঠকে মহাকাশ প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ক্রয়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, মানবাধিকার, নির্বাচন ও ইন্দো প্যাসিফিক ইস্যুর মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ঢাকার এক কূটনীতিক জানান, ফরাসি প্রেসিডেন্টর ঢাকা সফরে নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। দুই শীর্ষ নেতা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতা জোরদার করা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তারা রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দেবেন।
সরকারপ্রধানের আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে দিল্লি থেকে ঢাকায় আসেন ম্যাক্রোঁ। বিমানবন্দরে ম্যাক্রোঁকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে ফরাসি প্রেসিডেন্টকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। ম্যাক্রোঁর সফরসঙ্গী হিসেবে ঢাকায় এসেছেন ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা।
১৯৯০ সালে তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁর বাংলাদেশ সফরের পর এটি বাংলাদেশে কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় সফর।
সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে দুপুরের পর ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে ম্যাক্রোঁর। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।