নভেম্বর ২৪, ২০২৪

দেশের ২৩ম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাচ্ছেন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। সে সময় সুপ্রিম কোর্ট অবকাশকালীন ছুটিতে থাকায় আজ বৃহস্পতিবার ৩১ আগস্ট প্রধান বিচারপতির বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।

নিয়ম অনুসারে আজ তাকে আপিল বিভাগের এক নম্বর বিচার কক্ষে এটর্নি জেনারেল অফিস ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি (সুপ্রিম কোর্ট বার) বিদায়ী সংবর্ধনা দিবে।

প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরপরই বিচার বিভাগে আরো গতিশীলতা আনতে বেশকিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অধস্তন আদালতের জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন দেন। ফলে নিম্ন আদালতে মামলা নিষ্পত্তির হার বেড়েছে।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্ব গ্রহণের পর অধস্তন আদালত মনিটরিংয়ের জন্য প্রতিটি বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে দেন। হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন পুরোনা মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দেন। ফলে পুরোনা বহু মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং নিষ্পত্তির হার চলমান রয়েছে।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই আমি দেশের প্রতিটি বিভাগের অধস্তন আদালত মনিটরিংয়ের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন করে বিচারপতিকে দায়িত্ব দিয়ে ‘মনিটরিং কমিটি ফর সাবঅর্ডিনেট কোর্টস’ গঠন করি। দায়িত্ব প্রাপ্ত বিচারপতিদের নিরবচ্ছিন্ন তৎপরতা এবং প্রদত্ত দিক নির্দেশনা ও পরামর্র্শের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা নিষ্পত্তির গতি ইতোমধ্যে অনেকটাই বেড়েছে। মনিটরিং কমিটির বিচারপতিরা বিভিন্ন জেলার আদালতগুলো পরিদর্শন করেছেন।’

আদালতে আসা বিচার প্রার্থীদের সুবিধার জন্য তিনি সারাদেশের আদালতসমূহে ন্যয়কুঞ্জ তৈরির উদ্যোগ নেন। বিচার বিভাগে তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নেন তিনি।

দেশের ২৩ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়া পর দেশের আদালতসমূহে মামলাজট কমাতে এবং বিচারিক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেন প্রধান বিচারপতি। উচ্চ আদালতে বিচারাধীন ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিল নিষ্পত্তিতে বেঞ্চ সংখ্যা বৃদ্ধি করে দেন। ফলে উল্লেখযোগ্য হারে মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে।

আইনজীবীরা জানান, প্রধান বিচারপতির নানামূখী উদ্যোগের ফলে মামলা নিষ্পত্তি হার বাড়ছে। পাশাপাশি বিচার প্রার্থীদের হয়রানিও লাঘব হচ্ছে।
২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৫৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পড়ালেখা শেষে ১৯৮১ সালের ২১ আগস্ট জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি ১৯৮৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এবং ১৯৯৯ সালের ২৭ মে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগে এবং ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ আপিল বিভাগে নিয়োগ পান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এছাড়া তিনি ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। খবর বাসস।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...