সম্প্রতি রাশিয়ায় একের পর এক ড্রোন আক্রমণ চালিয়েছে ইউক্রেন। শুধু সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নয়, খোদ রাজধানী মস্কোয়। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে যার দূরত্ব অনেক। বস্তুত, ক্রেমলিনের সেনেটের ডোমেও ইউক্রেনের ড্রোন আঘাত করেছে। তাতে বড়সড় বিপর্যয় ঘটেনি। কিন্তু ক্রেমলিনের সেনেটে বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোন পৌঁছে যাওয়া রাশিয়ার জন্য যথেষ্ট চিন্তার।
ইউক্রেনের ড্রোন হামলার জন্য বার বার নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করতে হচ্ছে রাশিয়াকে। গত সোমবারও কিছুক্ষণের জন্য বিমানবন্দর বন্ধ করতে হয়। আকাশসীমা বন্ধ করার জন্যই বিমানবন্দরের কাজ আটকে গেছিল বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গত সপ্তাহে মস্কোর কমার্শিয়াল ডিস্ট্রিক্ট, যেখানে একাধিক হাইরাইস আছে, সেখানে অন্তত চারবার ড্রোন হামলা চালিয়েছে কিয়েভ। এই কমার্শিয়াল ডিস্ট্রিক্টে মস্কোর দুইটি মন্ত্রণালয় আছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিন মস্কোয় ইউক্রেনের ড্রোন দেখা গেছে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি। ক্রেমলিন সরাসরি এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইউক্রেনের ড্রোন নিয়ে যে তারা উদ্বেগে আছে, তা স্পষ্ট। যে কারণে বার বার সাময়িক সময়ের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করতে হচ্ছে।
ড্রোন হামলা চালিয়ে ইউক্রেন বড় বিস্ফোরণ ঘটাতে পারছে না। তবু এই হামলাকে কার্যকরী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। এর সাহায্যে রাশিয়াকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখা সম্ভব হয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বিশেষজ্ঞ ইগাল লেভিন ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, তুর্কমেনিস্তান ইতিমধ্যেই রাশিয়ার আকাশসীমা ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। নিয়মিত ড্রোন হামলা চললে, অন্য দেশও এই রাস্তাই নেবে। যা রাশিয়াকে বিড়ম্বনায় ফেলবে। এই আক্রমণের সাহায্যে রাশিয়ার স্বাভাবিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম এবং পণ্য পরিবহণকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখা সম্ভব। ইতিমধ্যেই কিয়েভ তাতে সফল হয়েছে।
কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে ইউক্রেনের ড্রোন মস্কোয় পৌঁছাচ্ছে? বস্তুত, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে এতটা ভিতরে ড্রোন হামলা চালানো খুব সহজ কাজ নয়। ড্রোন ইন্টারসেপ্টর দিয়ে অনেক আগেই তা গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা। এখনো পর্যন্ত রাশিয়া কিয়েভের কতগুলি ড্রোন নষ্ট করতে পেরেছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে বেশ কিছু ড্রোন যে মস্কোয় পৌঁছাতে পেরেছে, তা স্পষ্ট।
এখানেই প্রশ্ন। রাশিয়ার মতো শক্তিশালী দেশের কাছে যথেষ্ট ভালো এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম থাকার কথা। তার সাহায্যেই তাদের ড্রোন ইন্টারসেপ্ট করার কথা। মস্কো পর্যন্ত একটিও ড্রোন পৌঁছানোর কথা নয়। সীমান্তের কাছেই তা নামিয়ে দেওয়ার কথা। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, মস্কোর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম যথেষ্ট কার্যকরী নয়। আর সেই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে ইউক্রেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ