মণিপুর নিয়ে সংসদে বিতর্ক করার দাবি ছিল বিরোধীদলের। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিবৃতি দিতে হবে। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মণিপুর নিয়ে তারা বিতর্কে রাজি কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দেবে না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিতর্কের জবাব দেবেন। খবর ডিডাব্লিউ।
বিরোধীদলের ‘ইন্ডিয়া’ জোট তা মানতে চাননি। যেখানে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, ডিএমকে, জেডিইউ, জেএমএম, এনসিপি, আরজেডি, ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিডিপির মতো দলগুলি আছে।
সূত্র জানাচ্ছে, এত দ্রুত অনাস্থা প্রস্তাব আনাটা হলো তাদের রাজনৈতিক কৌশলের অংশ। পাশাপাশি মোদী ও শাহের কৌশল ভাঙ্গারও অংশ। আসলে বিরোধীরা সংসদ অচল করে রাখার পর মোদী ও শাহ ঠিক করেছেন, এবার তাদের বিলগুলি পাশ করিয়ে নেবে।
এবার সংসদে ৩১টি বিল পাস করাতে চায় সরকার। তার মধ্যে দিল্লি নিয়ে বিতর্কিত অর্ডিন্যান্সকে আইনে পরিণত করা সংক্রান্ত বিল আছে। যে অর্ডিন্যান্সে উচ্চপদস্থ আমলা নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্য সরকারের হাত থেকে নিয়ে লেফটন্যান্ট গভর্নর বা এলজিকে দেয়া হয়েছে।
আম আদমি পার্টির অনুরোধ মেনে ইন্ডিয়া জোটের সব বিরোধী দল ঠিক করেছে, এই অর্ডিন্যান্সে সংক্রান্ত বিলের বিরুদ্ধে তারা একজোট হয়ে ভোট দেবে। এই বিল তারা সর্বশক্তি দিয়ে রোখার চেষ্টা করবে। লোকসভায় তারা সংখ্যালঘু কিন্তু রাজ্যসভায় তারা এর বিরুদ্ধে একসাথে হয়ে সরকারকে চাপে রাখতে চাচ্ছে।
এই অবস্থায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনাস্থায় বিরোধীদের আক্রমণের প্রধান বিষয়ই হবে মণিপুর। অনাস্থা প্রস্তাব আনলে আগে তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে। তখন মণিপুর নিয়ে বলতে বাধ্য হবেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর তিনি যা বললেন, তা নিয়ে সংসদের বাইরেও ব্যবস্থা নেবে বিরোধীরা।
এদিনই বিজেপি সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, বিরোধীরা জোটের নাম দিয়েছে ইন্ডিয়া, তাতে কোনো লাভ নেই। এর আগে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ‘ইন্ডিয়া’ নাম দিয়ে ভারতকে শোষণ করেছে। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নামেও ‘ইন্ডিয়া’ আছে। তাই ‘ইন্ডিয়া’ নাম দিলেই কেউ ভালো হয়ে যায় না বা বাড়তি গুরুত্ব পায় না। ফলে ইন্ডিয়া জোটের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণটা এই দিক থেকেই আসবে বলে মনে করছেন বিরোধী নেতারা।
বিরোধী সাংসদদের একাংশ রাতভর গান্ধীমূর্তির সামনে অবস্থান করেছেন। এটা ছিল মণিপুর নিয়ে বিরোধী বিক্ষোভের অংশ। প্রায় প্রতিদিন সকালে গান্ধীমূর্তির সামনে ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির সাংসদরা বিক্ষোভ করছেন।