দেশের একমাত্র চার দেশিয় স্থলবন্দর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা দিয়ে গত ১০ দিন ধরে পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। ভারতের ফুলবাড়ি স্থলবন্দরের পাথর পরিবহনকারী ট্রাক মালিকদের ডাকা ধর্মঘটে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদের ৬ দিনের ছুটি শেষে গত ৩ জুলাই থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। ৫ জুলাই থেকে বন্ধ হয় পাথর আমদানি। পরে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকদিন পাথর আসলেও এখন পুরোদমে বন্ধ রয়েছে এই পণ্যটির আমদানি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার স্লট বুকিংয়ের নামে ট্রাক প্রতি তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার করে টাকা আদায় করতো। তারা ভুটানের পাথরবাহী ট্রাক থেকে টাকা আদায় করতেন না। এরই প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন করছেন ফুলবাড়ি বর্ডার লোকাল ট্রাক ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। তারা ভুটানের পাথরবাহী ট্রাক থেকেও টাকা আদায়ের দাবি জানায়।
এদিকে, ওপারের ধর্মঘটে পাথর আমদানি নির্ভর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে প্রায় ১০ দিন ধরে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমদানিকারকসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইদ্রিস আলী বলেন, আমাদের এ স্থলবন্দর পাথরের ওপর নির্ভরশীল। অন্য পণ্য বেশি আমদানি না হওয়ায় পাথর দিয়েই চলে এ বন্দর। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ভারত থেকে পাথর আমদানি হচ্ছে না। এতে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক অলস সময় কাটাচ্ছে।
স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ন আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন মুসা বলেন, ১০ দিন ধরে পাথরের কোনো ট্রাক আসছে না। ভারতের ফুলবাড়ি ট্রাক মালিকদের সংগঠনের আন্দোলনের ফলে আমাদের স্থলবন্দরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এতে আমরাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক সোলেমান পাশা বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্লট বুকিংয়ের নামে রপ্তানিযোগ্য পাথরের ট্রাক থেকে আকার ভেদে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। এজন্য সেখানকার ট্রাক মালিকরা পাথর পাঠানো বন্ধ রেখেছেন। এ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জেনেছি। কিন্তু ১০ দিনেও কোনো সুরাহা হয়নি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা নেই। ভারতের ফুলবাড়ি বন্দরে সমস্যার কারণে কয়েকদিন ধরে পাথর আমদানি বন্ধ আছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই আমরা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তবে এ বন্দর দিয়ে অন্য পণ্য আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক আছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।