ঈদের আমেজ যেন এখনো কাটেনি। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ঈদ মোবারক বলতেই উচ্ছ্বসিত আফগানিস্তান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহীদি কয়েকবার বলে উঠলেন। ঠোঁটে হাসির রেশ। শেষ পর্যন্ত সেই হাসি মাখা ঠোঁটেই বাংলাদেশকে দিয়ে বসলেন হুঙ্কার, জানিয়ে দিলেন টেস্টে যা কিছু করতে পারেননি ওয়ানডেতে সেটি করে দেখাতে প্রস্তুত তারা।
সাগরিকার পাড়ে সোমবার (০৩ জুলাই) সকালে আফগানদের অনুশীলন দেখে বোঝা গেলো রঙিন পোশাকে সাফল্য পেতে তারা কতটা মরিয়া। অনুশীলন শেষে অধিনায়কের কণ্ঠে তারই রেশ ফুটে উঠেছে, ‘টেস্ট ম্যাচটি আমাদের অনেক শিক্ষা দিয়েছে। আমরা এখন ভালোভাবে প্রস্তুত। আবুধাবিতে আমরা ১৫ দিনের ক্যাম্প করেছি। টেস্টে যা করতে পারিনি, এবার আমরা সবকিছুর জন্যই প্রস্তুত।’
৮৯ বছরের ইতিহাসে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় জয় তুলে নিয়েছে আফগানদের বিপক্ষে। ৫৪৬ রানে হারের পর আফগানিস্তান দল চলে যায় আবুধাবিতে ক্যাম্প করতে। সেখানে ক্যাম্প শেষে সরাসরি বাংলাদেশের বিমান ধরে।
ঈদ মোবারক জানালেও হাশমতুল্লাহদের ঈদের ছুটি বলতে কিছু ছিল না। চট্টগ্রাম পৌঁছেই একদিন বিশ্রাম নিয়ে আবার মাঠে নেমে পড়ে তারা।
টেস্টে আনকোরা দল নিয়ে এলেও ওয়ানডেতে তারা এসেছে পূর্ণশক্তির দল নিয়ে। রশিদ খান ফেরায় যেন আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন হাশমতুল্লাহ, ‘সে আমাদের জন্য অনেক বড় নাম। দলে যখন সে আমাদের সঙ্গে থাকে, অধিনায়ক হিসেবে আমি আত্মবিশ্বাস পাই। একাদশে যখন রশিদের মতো ক্রিকেটার থাকে, এটি আমাকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস দেয়। এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। সে টেস্ট ম্যাচ খেলেনি। এখন সে ওয়ানডে সিরিজে আছে। আমি জানি, সে আমাদের জন্য ভালো কিছু করবে।’
বাংলাদেশের মতো আফগানিস্তানও সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পেয়েছে। সুপার লিগে ৯ ম্যাচ কম খেলেও আফগানদের কোয়ালিফাই খেলতে হয়নি। ১৫ ম্যাচের মধ্যে ১১টিতে জয়! সেই প্রসঙ্গ টেনে আফগান অধিনায়ক জানিয়েছেন দারুণ লড়াইয়ের কথা। তবে ঘরের মাঠে তামিম ইকবালের দলকে কিছুটা সমীহও করছেন।
‘বাংলাদেশ সবসময় নিজেদের মাঠে ভালো খেলে। ওয়ানডেতে গত কয়েক বছর ধরে তারা ভালো খেলছে। তবে আমরাও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। আমরা ওয়ানডেতে গত দুই বছর ভালো খেলেছি।’
‘সুপার লিগ থেকে আমরা সরাসরি বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করেছি। আমরা ৯টি ম্যাচ খেলিনি। তবু এর মধ্যেই আমরা কোয়ালিফাই করেছি। আমরা এখানে ভালো খেলতে চাই। দুই দলের মধ্যে ভালো একটি লড়াই হবে’ -আরও যোগ করেন হাশমতুল্লাহ।
দুই দল এখন পর্যন্ত ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে। ৭টি জয়ে পাল্লা ভারি বাংলাদেশের। এই সিরিজে বাংলাদেশ ব্যবধান বাড়াবে নাকি আফগানিস্তান কমাবে, সেটি বলে দেবে সময়। তবে দুই দলের জন্য এটি হতে যাচ্ছে রোমাঞ্চকর লড়াই, এই সিরিজের পর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও একে অপরের মুখোমুখি হবে তারা। তাইতো এই সিরিজ যেন দুই দলের কাছে বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সেল!