ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

আজ শুক্রবার ঢাকার তিনটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে পরীমনি অভিনীত ‘মা’ ছবিটি। ছবির পরিচালক অরণ্য আনোয়ারকে আগেই বলে রেখেছিলেন, ১০ মাস বয়সী নিজের সন্তানকে নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে ‘মা’ ছবিটি উপভোগ করবেন পরীমনি।

কথামতো, বেলা ১১টার প্রদর্শনী শুরুর আগে নিজের সন্তান রাজ্যকে নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হন তিনি। ছবিতে পরীমনির সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করা শিশুটিও গাজীপুর থেকে এসেছিল তাঁর মা ও ভ্যানচালক বাবার সঙ্গে। ছবির শুরুতে সন্তান সঙ্গী হলেও একটা পর্যায়ে গিয়ে একাই ছবিটি দেখতে হয় পরীমনিকে।

কারণ, ছবিটি দেখতে দেখতে একসময় রাজ্য কান্নাকাটি শুরু করে। এরপর প্রেক্ষাগৃহের সামনে থাকা গাড়িতে ন্যানির কাছে রাজ্যকে রেখে বাকি ছবিটা দর্শকের সঙ্গে বসে দেখেন। অভিনয়জীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরীমনি। কখনো অ্যাকশন, কখনো ধনীর আদরের কন্যা, যাত্রাপালার নায়িকা কিংবা সংবাদকর্মী—আট বছরের ক্যারিয়ারে বহু চরিত্রে পরীমনিকে পাওয়া গেছে। প্রথমবারের মতো মায়ের চরিত্রে দর্শকের সামনে এলেন তিনি। সিনেমার পর্দায় নিজেকে দেখে আবেগাপ্লুত হয়েছেন পরীমনি।

রাজধানীর পল্লবী থেকে সকালে ছবিটি দেখতে এসেছিলেন জাহিদুল ইসলাম ও নীলুফার ইয়াসমিন দম্পতি। দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক শেষে বছরখানেক আগে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।

জানালেন, সময় পেলে প্রেক্ষাগৃহে এসে ছবি দেখেন। পরীমনির ‘রক্ত’, ‘স্বপ্নজাল’ ও ‘স্ফুলিঙ্গ’ ছবি তাঁরা প্রেক্ষাগৃহে উপভোগ করেছেন। বললেন, ‘পরীমনির অভিনয় আগের চেয়ে পরিণত হয়েছে। শেষের দিকের দৃশ্য তো কাঁদাল। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে, অভিনয়জীবনের এই সময়ে মায়ের মতো একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র বেছে নেওয়ার সাহস দেখানোকে। আমাদের মনে হয়েছে, পরীমনি তা বেশ ভালোভাবেই উতরে গেছেন।’

বড় পর্দায় নিজেকে দেখে আবেগপ্রবণ হয়েছেন পরীমনি। স্মৃতিকাতর হয়েছেন। কখনো আবার কেঁদেছেনও। পরক্ষণে আবার নিজেকে সামলে নিয়ে শাড়ির আঁচলে চোখ মুছে নিয়েছেন। কান্নার অবশ্য অনেক কারণ আছে। ‘মা’ ছবির শুটিংয়ের সময় পরীমনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

‘মা’ ছবির প্রদর্শনী শেষে প্রেক্ষাগৃহের পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে আসেন পরীমনি। নিচে থাকা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। ততক্ষণে জানা হয়ে যায়, ভক্তদের অনেকে ছুটে আসেন। আপু, আমি আপনার অনেক বড় ভক্ত, একটা সেলফি প্লিজ। পরীমনিও হাসিমুখে তাঁদের আবদার মেটান। প্রথম আলোর এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে নেমে এলেন নিচতলায়। বললেন, ‘বড় পর্দায় নিজেকে দেখছি। আশপাশের সবার অভিব্যক্তিও খেয়াল করছিলাম। সবাই যেভাবে মগ্ন হয়ে দেখছিল, ইমোশনাল হচ্ছিল—সেসব আমাকে ভীষণভাবে ইমোশনাল করেছে। আমার জীবনের অন্যতম একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে মা।’

ছবির গল্প বলতে বলতে মা পরীমনিও এসে পৌঁছালেন তাঁর সন্তানের কাছে। গাড়িতে উঠতেই ন্যানির কাছ থেকে মায়ের বুকে লাফ দিয়ে এল রাজ্য। মা পরীমনিও পরম যত্নে রাজ্যকে বুকে আগলে নিলেন। কপালে চুমু এঁকে দিলেন। ছুটে চললেন তাঁর বাসার দিকে। যাওয়ার আগে পরীমনি তাঁর দীপু মামাকে বলে গেলেন, পর্দায় সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করা শিশুটি ও তাঁর মা–বাবাকে নিয়ে যেন বাসায় আসে। কারণ, তাঁদের জন্য দুপুরে তাঁর বাসায় খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। একসঙ্গে নিজের সন্তান ও পর্দার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি দুপুরের খাবার খাবেন।

 

 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...