নভেম্বর ২৪, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্র ঋণের সীমা বাড়াতে না পারলে বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য দেশের বন্ধকি ঋণ বা ট্রেজারি বন্ডের সুদও বাড়তে পারে। এরফলে বাড়তে পারে বেকারত্ব।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের যুক্তরাষ্ট্র-বিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যান্ড্রু হান্টার বিবিসিকে বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণ বিশ্বের আর্থিক খাতের মৌলভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ঋণ বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ সম্পদ হিসেবে পরিচিত এবং বিশ্বের অন্যান্য আর্থিক সম্পদের মূল্য এর ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ভালো খবর হলো যুক্তরাষ্ট্র খেলাপি হলে নির্দিষ্ট কোনো দেশ অরক্ষিত হয়ে পড়বে, তা নয়। খারাপ খবর হলো, যুক্তরাষ্ট্রের খেলাপি হওয়ার ধাক্কায় বিশ্ব অর্থনীতি টালমাটাল হতে পারে।

মার্কিন ডলার বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে বহুল ব্যবহৃত। জ্বালানি তেল ও গমের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্য বিশ্ববাজারে ডলারে কেনাবেচা হয়। যুক্তরাষ্ট্র খেলাপি হলে ডলারের দাম পড়ে যেতে পারে। এটা আমদানিকারী দেশগুলোর জন্য সুখবর, কিন্তু সেই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা পণ্যমূল্য নির্ধারণে বিপাকে পড়বেন।

সেই সঙ্গে বিনিয়োগকারীরা ভাববেন, যুক্তরাষ্ট্র খেলাপি হয়ে গেছে, এরপর জাপান নাকি যুক্তরাজ্য। তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে। সাইমন ফ্রেঞ্চ বলেন, এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে পুনর্নির্ধারণ করবেন—অর্থনীতির পরিভাষায় যাকে বলে তাঁরা ঝুঁকি প্রিমিয়াম যোগ করবেন। এতে গমের মতো পণ্যের দাম অনেকটাই বেড়ে যাবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে বিশ্বের প্রায় সব দেশের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ আছে। অনেক দেশের পেনশন তহবিলের অর্থ এ বাজারে বিনিয়োগ করা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এ জে বেলের পরিচালক রাস মোল্ড বিবিসিকে বলেন, বৈশ্বিক স্টক মার্কেটের যা বাজারমূল্য, তার প্রায় ৬০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের।

সে জন্য বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার ওঠানামা করলে বিশ্বের অনেক দেশের পেনশন তহবিলের মূল্য বাড়ে বা কমে, সেটা মানুষ জানুক বা না জানুক। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার খেলাপি হলে সে দেশের শেয়ারবাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে তা হলেই যে আকাশ ভেঙে পড়বে, তা নয়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...