সুদানে সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে চলমান সপ্তাহব্যাপী সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪২০ জন নিহতের সংবাদ পাওয়া গেছে, আহত হয়েছেন আরও ৩ হাজার ৭০০ জন।রোববার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।
একই দিন পৃথক এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, সুদানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪১৩ জন এবং আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৫১ জন।
ক্ষমতার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৫ এপ্রিল সংঘাত শুরু হয় সুদানের সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সদস্যদের মধ্যে। সংঘাতে সামরিক বাহিনীর পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুদানের প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং আরএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আরএসএফের শীর্ষ নির্বাহী জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালু, যিনি জেনারেল হেমেদি নামেই বেশি পরিচিত।
২০২১ সালে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির, যিনি প্রায় ৩ দশক সুদানের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছিলেন। দেশটির সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ঘটে এই অভ্যুত্থান।
আরএসএফ-কে মূল সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে অনেক দিন ধরে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় ১০ বছর বিলম্ব চায় আরএসএফ। অন্যদিকে সেনাবাহিনী দুই বছরের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া উচিত বলে মনে করে।
সুদানে বেসামরিক শাসনে ফেরার প্রস্তাবিত পদক্ষেপের মূলে আছে আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার এ বিষয়টি। কিন্তু এর সময়সূচি নিয়ে দু,পক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরেই শুরু হয়েছে সংঘাত।
দুই পক্ষের মধ্যকার লড়াইয়ে ইতোমধ্যে মানবিক সংকটে পড়েছে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটি। সংঘাতের কারণে রাজধানী খার্তুমে বাড়ির ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন লাখ লাখ বাসিন্দা। দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে খাবার ও পানির অভাবে রয়েছেন বহু মানুষ। অনেক স্থানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
হামলার শিকার হচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও। ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ১৫ এপ্রিলের পর থেকে এ পর্যন্ত সুদানের অন্তত ১১টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সুদান থেকে নিজ নিজ কূটনৈতিক কর্মীদের ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে তাদের কূটনৈতিক কর্মীদের ফিরিয়ে এনেছে। জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশও তাদের কূটনৈতিক কর্মীদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুর করেছে।