বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা বা লক-ইন শেয়ারের বিপরীতে ঋণ নিতে চায় জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড ও জেএমআই ভেকসিন লিমিটেড। এ জন্য প্রতিষ্ঠান দুইটির পক্ষ থেকে লক-ইন শেয়ারের বিপরীতে ঋণ গ্রহণের সম্মতির জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন জানিয়েছে। তবে সার্বিক দিক বিবেচনা করে জেএমআই গ্রুপের দুইটি কোম্পানিটির আবেদন নাকচ করেছে বিএসইসি।
সম্প্রতি জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও জেএমআই ভেকসিন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে কমিশন।
এর আগে লক-ইন শেয়ারের বিপরীতে ঋণ গ্রহণের বিষয়ে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও জেএমআই ভেকসিন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বিএসইসির কাছে সম্মতি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন।
আব্দুর রাজ্জাকের করা আবেদনের বিষয়ে উল্লেখ করে বিএসইসির পৃথক দুটি চিঠিতে জানিয়েছে, শর্ত অনুযায়ী বর্তমানে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ নেই। ফলে দুটি আবেদনে উল্লেখ করা দুইটি বিও হিসাবে লক-ইন থাকা জেএমআই হসপিটালের শেয়ারের বিপরীতে মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ঋণ নিতে পারবে না। তাই লক-ইন শেয়ারের বিপরীতে ঋণ গ্রহণের বিষয়ে সম্মতি প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্রে জানা গেছে, মো. আব্দুর রাজ্জাকের বিও হিসাবে (বিও নম্বর- ১২০৫৭০০৪৬৬৭৫৭০৪) এবং জেএমআই ভেকসিনের বিও হিসাবে (বিও নম্বর- ১২০৩৭১০০৬৮৬৬৫৬৩৮) থাকা লক-ইন শেয়ারগুলোর বিপরীতে ঋণ নেওয়া হলে পরবর্তীতে তা ফ্রিজ করে রাখা হবে। ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ওই শেয়ারগুলো ফ্রিজ থাকবে। আর ওই লক-ইন শেয়ারের বিপরীতে ঋণ নেওয়া হলে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকের সম্মিলিতভাবে শেয়ারধারণ ৩০ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। তাই এ বিষয়টি আইনের পরিপন্থী না হওয়া বিএসইসি সম্মতি প্রদান করেনি।
তথ্য মতে, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং গত বছরের ৩১ মার্চ পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে। এর আগে ২৯ মার্চ কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপি) বরাদ্দপ্রাপ্ত শেয়ার সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে জমা হয়।
কোম্পানিটির আইপিও’র লটারিতে বরাদ্দপ্রাপ্ত শেয়ার প্রো-রাটার ভিত্তিতে আবেদনকারীদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদনকারীদের মধ্যে দেশি বিনিয়োগকারীরা প্রতি ১০ হাজার টাকার বিপরীতে ৫১টি করে শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন। প্রবাসী বা বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বরাদ্দ পেয়েছেন ৫৮টি করে শেয়ার। কোম্পানিটির আইপিও আবেদন ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে। এর আগে কোম্পানিটির নিলামের মাধ্যমে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির পর কাট-অফ প্রাইস ২৫ টাকা নির্ধারিত হয়। এর আগে গত ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর বিএসইসি ৭৯৯তম নিয়মিত কমিশন সভায় কোম্পানিটির বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়।
এদিকে ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২.৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। আলোচিত বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩.২৫ টাকা। আগের বছর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ২.৫০ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৮.৮৪ টাকা।
কোম্পানির ২০২২-২৩ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২২) শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ০.৫২ টাকা। গত হিসাব বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ৬৬ পয়সা। হিসাব বছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১.০৫ টাকা। গত হিসাব বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১.২৯ টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৮.৮৪ টাকা।