বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ খাতে নানা অনিয়ম হলেও, বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে অন্তবর্তী সরকারকে ১০০ দিনের বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ রোববার (১৮ আগস্ট) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংস্কার: সিপিডির প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালে বিদ্যুতের চাহিদা হতে পারে ২৭ হাজার মেগাওয়াট, রিজার্ভ মার্জিনসহ ৩৫ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকতে পারে। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনায় ৫৮ হাজার মেগাওয়াট ধরা হয়েছে লক্ষ্যমাত্রা, যা অযৌক্তিক। এই অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রার সুযোগ নিয়ে বেসরকারি খাত এলএনজি, কয়লা আমদানির মতো অবকাঠামো তৈরির চাপ দিতে পারে। তাই এটার সংশোধন দরকার বলে আমরা মনে করছি।’
দ্রুত বিদ্যুৎ ক্রয়ের বিশেষ আইন বাতিল করার পাশাপাশি জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে জবাবদিহিতা বাড়াতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে; সে ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে তাগিদ দিয়েছে সিপিডি।
এ খাতের জন্য ১৭টি সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে হবে। টেকসই জ্বালানি রূপান্তরে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারেও জোর দিতে হবে বলে মনে করে সিপিডি।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির উত্তরণে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) সক্ষমতা বাড়াতে হবে দাবি করে সিপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ প্রতিষ্ঠানকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অথবা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত।
সিপিডি বলছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড (আরপিজিসিএল) সহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গত কয়েক বছরের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করা জরুরি। তবে এর দায়িত্ব দেশের কোন অডিট ফার্মকে না দিয়ে আন্তর্জাতিক অডিট ফার্মকে দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি হলে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে বলে মনে করে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে কুইক ইনহ্যান্সমেন্ট অব ইলেক্ট্রিসিটি এন্ড পাওয়ার সাপ্লাই অ্যাক্ট, ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি এন্ড পাওয়ার মাস্টার প্লান (আইইএমপি), ন্যাশনাল এনার্জি পলিসি ও রিনিওয়েবল এনার্জি পলিসি সংস্কারের জোর দাবি জানায় সিপিডি।