চতুর্থ দফা সময় বাড়িয়েও হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ১৫৫ হজযাত্রী। ফলে সৌদি আরবের দেওয়া ৪৪ হাজারের বেশি কোটা খালি রেখেই এবারের হজের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এ কোটা এখন সৌদি আরবকে ফেরত দেওয়া হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী , নিবন্ধন শেষে এখনও কোটা খালি রয়েছে ৪৪ হাজার ৪৩টি। এ বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করে দেয় সৌদি আরব। এর মধ্যে সরকারিভাবে হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন চার হাজার ২৬০ জন। বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন। সবমিলিয়ে মোট নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ১৫৫ জন। বাকি ৪৪ হাজার ৪৩টি কোটা ফেরত যাবে।
তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, শেষদিনে অনেকে নিবন্ধন করেছেন কিন্তু তাদের পেমেন্ট পেন্ডিং (অপেক্ষমাণ) রয়েছে। এ সংখ্যা যোগ করলে আরও হাজার দুয়েক কমবে। তারপরও ৪০ হাজারের মতো কোটা সৌদি আরবকে ফেরত দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ অনুবিভাগ) মতিউল ইসলাম বলেন, হজের কোটা ফেরত দেওয়ার ছাড়া আর উপায় থাকল না। বুধবার চূড়ান্ত করে বাকি কোটা সৌদি সরকারকে ফেরত দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, হজের খরচ সাধারণ হাজীদের নাগালের বাইলে চলে যাওয়ায় গত দুই বছর ধরে কোটা ফেরত যাচ্ছে। অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজ পালন করতে পারছেন না। অধরা থেকে যাচ্ছে হজ পালনের স্বপ্ন।
২০২৩ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজ ছয় লাখ ৮৩ হাজার টাকা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছয় লাখ ৭২ হাজার টাকা নির্ধারণ হয়। অথচ গতবারের তুলনায় এবার প্যাকেজের দাম ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কমানো হয়েছে। এরপরও হজযাত্রীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে খরচ মেটাতে।
এবার হজের নিবন্ধন শুরু হয় ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর, যা ১০ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রত্যাশিত সাড়া না মেলায় প্রথম দফায় সময় বাড়ানো হয় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়। তৃতীয় দফায় ২৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতেও হজ নিবন্ধনে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না মেলায় শেষ দফায় ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়।
চলতি ২০২৪ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার দুটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য পাঁচ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। বিশেষ প্যাকেজের মূল্য নয় লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। অপরদিকে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুটি প্যাকেজের মূল্য যথাক্রমে পাঁচ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং আট লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ টাকা। যদিও গত বছরের চেয়ে এ বছর সর্বনিম্ন প্যাকেজের মূল্য এক লাখ চার হাজার ১৬০ টাকা কমানো হয়েছে। এরপরও বর্তমান হজ প্যাকেজের মূল্যকে অনেক বেশি মনে করছেন হজে যেতে আগ্রহীরা।
চাঁদ দেখা-সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।