নভেম্বর ১৮, ২০২৪

সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকায় পিএফআই সিকিউরিটিজের স্টক-ডিলার এবং স্টক-ব্রোকার রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের (নিবন্ধন সনদ) নবায়ন স্থগিত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে লেনদেন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিও হিসাবধারী বিনিয়োগকারীরা।

আজ (১৮ নভেম্বর) পিএফআই সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মনিটরিং অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগের প্রধান মো. বজলুর রহমান স্বাক্ষরিত সনদ নবায়ন স্থগিত সংক্রান্ত এক চিঠি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, পিএফআই সিকিউরিটিজ পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ। প্রতিষ্ঠানটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে (সিসিএ) ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা ঘাটতি থাকায় এর সনদ নবায়ন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। গতকাল নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সনদ নবায়ন করার জন্য আবেদন জানালেও তা গ্রহণ করেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ফলে প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন কার্যক্রম আজ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে ট্রেড বা লেনদেন বন্ধ হওয়া বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিও হিসাবধারী সাধারন বিনিয়োগকারীরা। অস্থিতিশীল শেয়ারবাজারের মাঝে তারা ব্রোকারেজ হাউজটির অনিয়মের কারণে লেনদেনের সুযোগ পাননি।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির এক বিও হিসাবধারী বলেন, আমার বিনিয়োগকৃত কোম্পানিগুলোর মাঝে একটি কোম্পানির ক্যাটাগরি ডাউন হয়েছে। ধারণা করছি, তারা এবার ভালো লভ্যাংশ দিবেনা এবং দরপতনের মুখে পড়বে। কিন্তু পিএফআই সিকিউরিটিজে আমার বিও হবার কারণে আমি আজ শেয়ারটি বিক্রি করতে পারলাম না। ফলে আমাকে লোকসান গুনতে হতে পারে।

পিএফআই সিকিউরিটিজের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হলেও প্রতিষ্ঠানটি তা আমলে নেয়নি। তাতে প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে ১১ সেপ্টেম্বর কড়া সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিএসইসি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি পূরণের জন্য পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সময় বৃদ্ধির আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। একইসাথে ব্রোকারেজ হাউজটির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকবৃন্দ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিইও-এর সকল ব্যাংক হিসাবের উত্তোলন বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) পত্র প্রেরণ এবং এসব ব্যক্তিবর্গের সকল বিও হিসাব অবরুদ্ধকরণের জন্য সেন্ট্রাল ডিপজিটরী বাংলাদেশ লিমিটেডকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ব্রোকার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকবৃন্দ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিইওর দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের জন্য পুলিশের বিশেষ শাখা বরাবর অনুরোধ পত্র প্রেরণ করা হয়।

এছাড়া পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী ফরিদউদ্দিন আহমেদ বরাবর পাঠানো বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের অনুকূলে স্টক-ডিলার এবং স্টক-ব্রোকার নিবন্ধন নবায়ন করার অবস্থানে নেই। কারণ ২১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকের পাওনা হিসাবে ২৮ কোটি ১৮ লাখ ০৫ হাজার ৭০৮ টাকা ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে ১৭ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ কারণে নবায়নের যে আবেদন করা হয়েছে তা গ্রহণ করা হয়নি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...