কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে গত কয়েক বছরে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। এতেই টালমাটাল হয়ে পরে সারা বিশ্বের অর্থনীতি। এর উত্তাপ থেকে রেহাই পায়নি বাংলাদেশও। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের পুঁজিবাজারসহ সার্বিক অর্থনীতিতে। একইসঙ্গে দেখা দেয় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট। এমন পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন এবং ভিত শক্তিশালী করতে চলতি বছরজুড়ে সক্রিয় ছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশন (বিএসইসি)।
কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে গত কয়েক বছরে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। এতেই টালমাটাল হয়ে পরে সারা বিশ্বের অর্থনীতি। এর উত্তাপ থেকে রেহাই পায়নি বাংলাদেশও। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের পুঁজিবাজারসহ সার্বিক অর্থনীতিতে। একইসঙ্গে দেখা দেয় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট। এমন পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন এবং ভিত শক্তিশালী করতে চলতি বছরজুড়ে সক্রিয় ছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশন (বিএসইসি)।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন যেভাবে দেখছেন ২০২৩ সালকে, তার লিখনী হুবহু তুলে ধরা হলো –
“দেশের পূজিবাজারে দ্বিতীয়বার যখন শেয়ারের Floor Price বেধে দেয়া হয়,সেই সময় সার্বিক বাজার স্থবির থাকলেও দু-একটি শেয়ার যেন ত্রানকর্তা হয়ে দাঁড়ায়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল সেবা খাতের সীপার্ল হোটেলের শেয়ার এবং খাদ্য খাতের এমারেল্ড অয়েল। সীপার্লের শেয়ার দর ৪৫ টাকা থেকে থেমে থেমে খুব অল্প সময়ে ৩২৮ টাকা। যে দামেই বিনিয়োগ করেছে যারা, প্রত্যেকেই ভাল মুনাফা করেছে,তখন বাজারে খবর ছিল,বিদেশি একটা কোম্পানি এখানে বিনিয়োগ করবে ৫০০ টাকা যেতে পারে। ওই শেয়ারের যারা মেকার ছিল,সবাই ধীরে ধীরে শেয়ার বিতরন করে,রুপালী লাইফকে প্রায় তিনগুণ করে ফেলে,রুপালী লাইফ দেখে,পাশাপাশি বেশ কিছু লাইফের শেয়ারের দর বৃদ্ধি পায়। লাইফ বাড়ার পাশাপাশি অসময়ে বাড়ে সাধারন বীমার শেয়ার, বিশেষ করে ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের দর ব্যাপক বাড়ার মধ্য দিয়ে অন্যান্য সাধারন বীমা বাড়ে।কিন্তু সেপ্টেম্বর প্রান্তিককে সামনে রেখে,মেকাররা যখন ফান্ড প্রত্যাহার করে,তখন ওইসব শেয়ার আবার Floor Price এর দিকে যাত্রা শুরু করে। তারপর শুরু হয় তান্ডবলীলা, উৎপাদনে নাই এমন কোম্পানির দর বৃদ্ধির অসুস্থ প্রতিযোগীতা। চারগুণ থেকে দশগুণ পর্যন্ত বাড়ে ওইসব শেয়ারের দাম। সব খাওয়া দাওয়া শেষ করে,যেখানে গুটি কয়েক মেকার ছাড়া সবাই বাজারে নীরব দর্শক,তখন দর বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয় মিউচুয়াল ফান্ড। যদি কোন প্রতিষ্ঠান ব্যাবসাই সেভাবে না পায়,তাহলে মিউচুয়াল ফান্ডের দর বৃদ্ধি কি টেকসই হবে? তাই ২০২৩ সাল যেভাবে গিয়েছে,আইটেম বা মেকার ভিত্তিক বাজার,সেখানে ২০২৪ সালে অবস্থা পরিবর্তনের মত তেমন কিছু তো দেখা যাচ্ছে না। বাজারে যদি পেশাগত ভাবে প্রতিষ্ঠানগুলি আচরণ না করে,বাজার এমন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ২০২৩ সালে কি করা যেত, Floor Price ঢালাওভাবে বহাল না রেখে,যেসব শেয়ারে মার্জিন লোন ছিল,ভাল কোম্পানি, সেসবকে রেখে,যেসব অযৌক্তিক কারনে Floor Price -এ আছে সেসবের Floor Price প্রত্যাহার করা। যেসব শেয়ারের দর Floor Price থেকে উঠে এসেছে,সেসবের Floor Price তুলে দেয়া। উৎপাদনে নাই এমন কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির গতি থামাতে ট্রেড সাসপেন্ড করা। এইসব ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বাজারের হাল এমন হত না। তাই ২০২৩ থেকে বিনিয়োগকারীদের ২০২৪-এ কি শিক্ষা নেয়া উচিৎ? কোন অবস্থায় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া শেয়ার হাজার প্রলোভনেও উচ্চ মূল্যে ক্রয় না করা। মার্জিন ঋন না নেয়া, প্রফিট পার্সেন্টেজ ঠিক করে প্রফিট রিয়েলাইজ করা। নিজের বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিজ দায়িত্বে ঠিক করা,কোন গুজবে কান না দেয়া। ২০২৪ সাল সবাইকে, অতীত থেকে শিক্ষা নেয়ার সুযোগ দিক এই প্রত্যাশা রইল”।