সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

ভারত আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর বাংলাদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। একদিন আগের ১২০ টাকার পেঁয়াজ রাজধানীর খুচরা বাজারে এখন কেজি প্রতি ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজার, উত্তর বাড্ডা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, হাতিরপুল ও কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজারে ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে অস্বাভাবিক এই মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তবে দেশের সব পাইকারি বাজারেই পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভোরে শ্যামবাজার থেকে বহু কষ্টে এলসির (ভারতীয়) দুই মণ পেঁয়াজ এনেছি। আমি পাইকারিতে কিনেছি ৭ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে। আনতে খরচ পড়ছে ৪০০-৪৫০ টাকা। এখন ২০০ টাকা কেজি না বেচলে তো লস।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে, মাথায় হাত বেশিরভাগ ক্রেতার। কারণ এক রাতের ব্যবধানে, কেজিতে ১০০ টাকা দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে, বাজারে অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ছে পণ্যটির। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকা আর দেশি পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম ২৪০ টাকায় ঠেকেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম কমার সম্ভাবনা খুব কম। নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠেছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে পাতাসহ ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে।

এক রাতের ব্যবধানে মোংলায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। গতকাল শুক্রবার যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০৫ থেকে ১১০টাকায়, সেই পেঁয়াজ রাতের ব্যবধানে শনিবার দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ১৮০ টাকা পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর ভারত প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলা হয়েছিল। তার আগেই দেশটি পেঁয়াজ একেবারে রপ্তানি বন্ধ করে দিল। যদিও কোনো দেশের সরকার অনুরোধ করলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানির সুযোগ দিতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টনের বেশি। গত অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ টনের মতো। তবে ক্ষেত থেকে তুলে সংরক্ষণ করা পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়। ফলে প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ লাখ টন আমদানি করতে হয়, যার ৯০ শতাংশের বেশি আসে ভারত থেকে। এ জন্য ভারত পেঁয়াজের ওপর কোনো ধরনের খড়্গ দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে প্রভাব পড়ে। যেমনটি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে এ দেশে রেকর্ড ৩০০ টাকা ছুঁয়েছিল কেজি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *