সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

দেশের ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে উদ্বেগজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে কর্মসংস্থান। এসব ব্যাংকে চলতি বছরের এপ্রিল-জুন সময়ে ১২৪ জন ব্যাংকার কমে গেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে ব্যাংকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ১৯ জন। তিন মাস আগে অর্থাৎ মার্চ শেষে এসব ব্যাংকে কর্মীর সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার ১৪৩ জন। সে হিসাবে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকার কমেছে ১২৪ জন।

এর আগে করোনার সময় অন্যায় ও অমানবিকভাবে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক ছয় হাজারের মতো কর্মীকে‌ পদত্যাগে বাধ্য করার পাশাপাশি ছাঁটাই করেছিলো। এরপরে চাকরিচ্যুত বা পদত্যাগে বাধ্য হওয়া এসব কর্মীকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছিলো আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

তখন বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনায় বলেছিলো, সুনির্দিষ্ট ও প্রমাণিত অভিযোগ ছাড়া কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না। পাশাপাশি মহামারি করোনার সময়ে চাকরিচ্যুত বা পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ব্যাংক কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে।

করোনার সময়ে সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে বিপুল অংকের আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিলো। এ সব প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন ও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং সেবা দিয়েছিলো। এ সময় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, জুন শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর আমানত ৪ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট ব্যাংক আমানতের ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ শরিয়াহ ব্যাংকগুলোয়। আগের প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) এসব ব্যাংকগুলোয় এই হার ছিল ২৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

তবে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ঋণ দেওয়ার হার প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকে সব শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ঋণ দিয়েছিল মোট ব্যাংক ঋণের ২৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ১৮ শতাংশ, যা পরিমাণে ৪ লাখ সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকার মতো। এপ্রিল–জুন প্রান্তিক শেষে দেশের ব্যাংক খাতে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ লাখ সাড়ে ৪৪ হাজার কোটি টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে প্রবাসী আয় আসার হারও কমেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশে আসা মোট প্রবাসী আয়ের ৫৫ শতাংশ এসেছিল শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে যা কমে হয়েছে ৩৮ শতাংশ। তিন মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয়ের হার কমেছে ১৭ শতাংশ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *