মধ্যরাতে আকস্মিক এক ঘটনার শিকার হয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। কে বা কারা তাকে অনুসরণ করে পিছু নেয়ার ব্যাপারে বুধবার (২৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে এক পোস্টে জানান তিনি। তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনী প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাবেক এ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
এবার এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সরাসরি নিরাপত্তা চাইলেন সোহেল তাজ। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরের দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর পরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। একইসঙ্গে রাজনীতিতে ফেরার প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেন তিনি।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে সোহেল তাজ বলেন, ছাত্র-জনতার গণ অভুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সরকার গঠিত হওয়ায় মানুষের প্রত্যাশা তাদের কাছে বেশি। তবে সরকারের প্রথম দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা। প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, কোনো সরকারের সময়ই ঘটে যাওয়া গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। আওয়ামী লীগসহ সব দলেরই আত্ম-সমালোচনা করা উচিত। আওয়ামী লীগের যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সবাই দোষী নয়। বিষয়গুলো নিয়ে আরও সচেতন হওয়া জরুরি এবং এসবের সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন সোহেল তাজ।
এদিকে রাজনীতিতে ফিরে আসা প্রসঙ্গেও এ সময় কথা বলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ। তিনি স্পষ্টতই জানান, রাজনীতিতে আর ফিরবেন না। বলেন, দেশের এই নোংরা, পচা, গলিত রাজনীতিতে আর ফিরব না।
এর আগে বুধবার মধ্যরাতে ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘রাতে কাজ থেকে ফেরার সময় একটি খুবই আতঙ্কজনক ও রহস্যজনক ঘটনার শিকার হই। একজন মোটরসাইকেল আরোহী আমাকে সংসদ ভবন থেকে ফলো করে ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে চলে আসে এবং একটা সময় তার বুকে লাল-নীল বাতি জ্বালিয়ে আমাকে থামতে বলে। আমি থামার পর তার পরিচয় জানতে চাই এবং আমাকে কেন থামতে বললেন তা তাকে জিজ্ঞেস করি। প্রতিউত্তরে সে আমাকে বলে যে তাদের লোক আসছে আর আমার তাদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
‘আমি আবার তার পরিচয় জানতে চাইলাম এবং তাকে জিজ্ঞেস করলাম তিনি কি আমাকে চিনতে পেরেছেন কিনা। জবাবে সে আমাকে বলল আমি আপনাকে চিনি, আপনি সোহেল তাজ। তারপর সে মোবাইল ফোনে বলল যে সে আমাকে থামিয়েছে এবং লোকেশন জানিয়ে আসতে বলল। আমি আবার তার পরিচয় জানতে চাইলাম এবং কারা আসছে আর কেন আমাকে থামিয়েছে জানতে চাইলাম। সে কোনো উত্তর না দিয়ে আবার ফোনে কথা বলল, তারপর আমাকে বলল চলে যেতে। আর সেও মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে চলে গেল।’
সবশেষ সোহেল তাজ লিখেছেন, ‘তার কথা বলার ধরণ এবং আচরণে আমি একেবারে কনফিডেন্ট সে কোনো গোয়েন্দা সংস্থার লোক। এইভাবে মানুষকে যাতে হয়রানি না করা হয় সেটাই ছিল আমাদের সবার প্রত্যাশা। এখন দেখা যাচ্ছে একই কায়দায় সব চলছে; ছি ছি।’