ভাগ্য ফেরাতে ৩ মাস আগে সৌদি আরব পাড়ি জমান বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান শাহজালাল নাঈম (২২)। প্রবাসে কিছুদিন হলো চাকরি শুরু করেছিলেন। কিন্তু স্ট্রোক করে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মরদেহ দেশে এনে শুক্রবার (৩১ মে) রাত ১০দিকে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নিজ বাড়িতে নাঈমের দাফন করা হয়।
শাহজালাল নাঈম নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের নলুয়া গ্রামের রফিক মুন্সী বাড়ির শাহ আলমের ছেলে। তিন মাস আগে তিনি ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সৌদি আরবে পাড়ি জমান।
জানা যায়, গত শনিবার (২৫ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় জেদ্দায় কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে বুকে ব্যথা অনুভব করেন নাঈম। সহকর্মীরা দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর শুক্রবার (৩১ মে) সকালে নাঈমের মরদেহ দেশে ফেরে। এদিন সন্ধ্যায় মরদেহ নিজ বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়ে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে নলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে নিজ বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাদার কবরের পাশে তাকে শায়িত করা হয়।
মৃত নাঈমের সহকর্মী প্রবাসী মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, আমরা এক সঙ্গে কাজ করি ও থাকি। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে হঠাৎ নাঈমের বুকে ব্যথা অনুভব করে। আমরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসক বলে সে স্ট্রোক করে মারা গেছে। অল্প বয়সে পরিবারের মায়া ত্যাগ করে প্রবাসে এসেছিল। তার এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।
নাঈমের বন্ধু হৃদয় বলেন, তার বয়স মাত্র ১৯ বছর। বিদেশে যেতে বয়স বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাবা-মায়ের কত স্বপ্ন ছিল একমাত্র ছেলেকে নিয়ে! কথা ছিল ছেলে বিদেশ যাবে, টাকা উপার্জন করে বাবা-মা পরিবারকে সুখে রাখবে। সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবে, অভাবগুলো দূর করবে। কিন্তু আজ সে পরপারে পাড়ি জমিয়েছে।
নাঈমের বাবা শাহ আলম বলেন, নাঈম পড়াশোনা রেখে পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করতে প্রবাসে পাড়ি গিয়েছিল। কিন্তু তিন মাসের মাথায় আজ সে কফিনবন্দি হয়ে ফিরেছে। তার মা বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। আমিও ছেলেকে হারিয়ে পাগলের মতো হয়ে আছি। আমাদের পারিবারিক কবরস্থানে আমার বাবাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করেছি। আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।
জানাজায় অংশ নেওয়া ডমুরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন কানন বলেন, ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সৌদি আরব গিয়ে নাঈম কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফিরেছে। তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনার সাথে সাথে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।