নভেম্বর ২৪, ২০২৪

সৌদি আরব জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রবার্তো মানচিনি। এ মাসের শুরুতে ইতালির দায়িত্ব ছাড়ার পর ২৫ মিলিয়ন ডলারে তিনি সৌদির সাথে চুক্তি করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত বছর কাতার বিশ^কাপে আর্জেন্টিনাকে প্রথম ম্যাচে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল সৌদি আরব। ফ্রান্সে জাতীয় নারী দলের দায়িত্ব নিতে গিয়ে হার্ভে রেনার্ড সৌদির কাজ ছেড়ে দিলে এতদিন পর্যন্ত কোচবিহীন ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

৫৮ বছর বয়সী মানচিনির অধীনে ইতালি ২০২০ ইউরো শিরোপা জিতলেও গত বছর বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের বাঁধা পেরুতে পারেনি। চার বছরের জন্য সৌদি আরবের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করার পর মানচিনি বলেছেন, ‘সৌদি আরবের জাতীয় দলের কোচের প্রস্তাব পাওয়াটা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের। আমি বিশ্বাস করি এটা আমার জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ। নতুন একটি দেশে বিশেষ করে এশিয়ান ফুটবলে এই মুহূর্তে অন্যতম জনপ্রিয় দলটির কোচ হিসেবে আমি ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবো। সৌদি পেশাদার লিগে এই মুহূর্তে যেভাবে শীর্ষসারির ইউরোপীয়ান খেলোয়াড়রা খেলতে আসছে তাতে এদেশের জাতীয় দলের উন্নতির সম্ভাবনাই ফুটে উঠেছে।’খবর বাসস

এবারের গ্রীষ্মে সৌদি পেশাদার লিগের শীর্ষ চারটি দল বেশ কিছু ইউরোপীয়ান তারকা খেলোয়াড়কে দলে ভিড়িয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ব্রাজিল সুপারস্টার নেইমার এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছেন। কার্যত জানুয়ারিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো আল নাসরে যোগ দেবার পর থেকেই একে একে তারকারা এই লিগের আকর্ষনীয় প্রস্তাবে আকৃষ্ঠ হয়েছেন।

মানচিনির ইতালি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত অনেককেই হতাশ করেছে। এ মাসের শুরুতে তার উপর অনুর্ধ্ব-২১ ও অনুর্ধ্ব-২০ দলের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। যদিও সৌদি আরবের বিপুল পরিমান অর্থের প্রস্তাবে তার রাজী হবার সিদ্ধান্ত বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। যদিও ইতালি দল থেকে পদত্যাগের কারন হিসেবে সৌদির প্রস্তাব পাওয়াকে অস্বীকার করেন।

মানচিনির স্থানে ইতালি দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নাপোলির সাবেক কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তি। পাঁচ বছর মানচিনি আজ্জুরিদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে ইউরো ২০২০ শিরোপা ঘরে তুলে সমস্যা জর্জরিত ফুটবল দলটিকে পুনরায় লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। কিন্তু গত বছর প্লে-অফে পুঁচকে নর্থ মেসিডোনিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে ইতালি বিদায় নেবার পর হতাশা আরো বেড়ে যায়। এনিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপে খেলতে ব্যর্থ হলো ইতালি।

সাম্পদোরিয়ার হয়ে পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৯৯১ সালে সিরি-এ শিরোপা ছাড়াও চারটি ইতালিয়া কাপ জয় করেছিলেন মানচিনি। এই ক্লাবের হয়ে সদ্য প্রয়াত গিয়ানলুকা ভিয়াল্লি সাথে আক্রমনভাগের নেতৃত্ব দিয়েছেন মানচিনি। কোচ হিসেবে ইন্টার মিলানের হয়ে তিনটি সিরি-এ শিরোপা জয় করেছেন। ২০১২ সালে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে।

সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশন মানচিনির সাথে চুক্তির পরিমান প্রকাশ করেনি। তবে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে সৌদি ফেডারেশন এক বিবৃবিতে বলেছে, ‘এই নিয়োগ সৌদি আরবে জাতীয় দলের নব যুগের ইঙ্গিত দিচ্ছে। মানচিনির সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা আমাদের দলের জন্য নতুন এই মাইলস্টোন প্রতিষ্ঠ করবে।’

আগামী ৮ সেপ্টেম্বর সৌদি মালিকানাধীন প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব নিউক্যাসলের হোম গ্রাউন্ড সেন্ট জেমস পার্কে কোস্টা রিকার সাথে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মানচিনির অধীনে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে সৌদি আরব। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর একই ভেন্যুতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরো একটি প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।

চুক্তির মেয়াদ এটাই প্রমান করে আগামী বিশ্বকাপে মানচিনির অধীনেই হয়তো সৌদিকে মাঠে দেখা যাবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...