ডিসেম্বর ৩, ২০২৪

ডেঙ্গু সাধারণত বর্ষাকালে হয়। কারণ এসময় এডিস মশার বিস্তার ঘটে। ২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এ চিত্রই ছিল। আগস্টের পর কমে আসত এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা।

কিন্তু ২০২১ সাল থেকে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ সেপ্টেম্বরের পর অক্টোবর এসেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এ মাসই সবচে ভয়ংকর হতে পারে ডেঙ্গুর জন্য। ২০২২ সালে দেশে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয় অক্টোবর মাসে। পরের মাসেও তাই। এবারও এমনটি ঘটতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

গতমাসে সেপ্টেম্বরে মারা গেছেন ৮০ জন। গত সপ্তাহে একদিনে ৮ জন মারা গেছেন।

ফলে ডেঙ্গু ভীতি ছড়াচ্ছে। কারণ প্রতি সপ্তাহে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশের বেশি হারে বেড়েছে।

গতকাল সোমবার ( ৩০ সেপ্টেম্বর) ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনে দুটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কিন্তু সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টজনেরা। যেমন, স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হওয়ার আগে থেকেই প্রতিরোধের ব্যবস্থা খুব একটা নেওয়া হয় না। এডিস মশার বিস্তার প্রতিরোধ করা হয় না। প্রতিবছর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা তিন দফায় ডেঙ্গুর লার্ভা জরিপ করে তা স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে বর্ষাপূর্ব জরিপ হয়েছিল। কিন্তু বর্ষা ও বর্ষাপরবর্তী জরিপ হয়নি। গত বছর অক্টোবরের মধ্যে এই দুই পর্যায়ের জরিপ সম্পন্ন হয়েছিল। এমনটি ঘটার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের ফলে এ সুযোগ পাওয়া যায়নি।

তাই এবার একটু ঝুঁকিই রয়েছে । গতমাসে প্রথম ৭ দিনে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারান ১১ জন। আর শেষ ৭ দিনে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩০ জন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশারের একটি গবেষণায় জানা যায়, এবার সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে তার আগের সপ্তাহের তুলনায় এডিস মশা বেড়েছে ১৫ শতাংশের বেশি। এটি বাড়ার আরও আশঙ্কা রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক শেখ দাউদ আদনান সাংবাদিকদের এরিমধ্যে বলেছেন, ‘ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বিষয়টি উদ্বেগের। নিয়ন্ত্রণে আমরা সবধরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...