সেন্টমার্টিন দ্বীপে নির্মাণাধীন ১২ হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক ফাইজুল কবির বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
গত ২৫ জানুয়ারি টেকনাফ থানায় মামলাটি করা হলেও প্রভাবশালীদের নানা চাপে তা প্রকাশ পায় আজ সোমবার। এ মামলার মধ্য দিয়ে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন রক্ষায় প্রথমবারের মতো আইনি কার্যক্রম শুরু করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
মামলার আসামিরা হলেন– সেন্টমার্টিন দ্বীপের কোনাপাড়া এলাকার ট্রফিকানা বিচ রিসোর্টের মালিক শেখ ফরহাদ, গলাচিপা এলাকার জলকুটি রিসোর্টের মালিক ড. মমি আনসারী, দক্ষিণপাড়ার আরণ্যক ইকো রিসোর্টের মালিক মো. খাইরুল আলম, কোনাপাড়ার মেঘনা বিচ ভিউ রিসোর্টের মালিক মোশাররফ হোসেন, পশ্চিম কোনাপাড়ার ডিঙ্গি ইকো রিসোর্টের মালিক মো. মোবাশ্বির চৌধুরী, জলকাব্য রিসোর্টের মালিক চপল কর্মকার ও চঞ্চল কর্মকার, পশ্চিমপাড়ার গ্রিন বিচ রিসোর্টের মালিক অজিত উল্লাহ, গলাচিপা এলাকার সূর্যস্নান হোটেলের মালিক ইমরান, সান অ্যান্ড সেন্ড টুইন বিচ রিসোর্টের মালিক ইমতিয়াজুল ফরহাদ, নোঙ্গর বিচ রিসোর্টের মালিক সাজ্জাদ মাহমুদ, পশ্চিমপাড়ার নীল হাওয়া রিসোর্টের মালিক আব্দুল্লাহির মামুন গং ও গলাচিপা এলাকার নামবিহীন হোটেলের মালিক ফেরদৌস সাগর।
মামলার বাদী ও পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক ফাইজুল কবির বলেন, ১২টি আবাসিক হোটেল প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় (ইসিএ) পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া নির্মাণকাজ শুরু করার পরপরই কাজ বন্ধ করতে প্রথমে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়। এরপরও কাজ বন্ধ না করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলাটি করা হয়েছে।
জানা যায়, পরিবেশগত ঝুঁকিতে থাকা সেন্টমার্টিনকে গত ৪ জানুয়ারি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া (এমপিএ) ঘোষণা করা হলেও টেকনাফ থেকে নির্মাণসামগ্রী নিয়ে সেখানে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে স্থাপনা। ২০২০ সালে যেখানে দ্বীপে ছোট-বড় ১২৩টি আবাসিক হোটেল ও কটেজ ছিল, এখন সেই সংখ্যা পৌঁছেছে দুইশর কাছাকাছি।
এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে সচেতনতা কার্যক্রমের পাশাপাশি সেখানে অভিযান চালিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করা হলেও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ থেমে থাকেনি।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, পুরো সেন্টমার্টিন দ্বীপটি প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা। তাই দ্বীপটিতে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া কোনো স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। এখন থেকে প্রতিটি অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।