নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ছবি ঘিরে বিতর্কের মুখে পড়েছেন ঢাকাই সিনেমার নায়ক সিয়াম আহমেদ ও তার স্ত্রী শাম্মা রুশাফি অবন্তী। ছবিটি বছর তিনেক আগের হলেও সেটি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি।
সিয়াম-অবন্তী দম্পতি লুসাই জনগোষ্ঠীর রাজার আমন্ত্রণে বছর তিনেক আগে সাজেকে গিয়েছিলেন ঘুরতে। সেখানে তারা বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং লুসাই গোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে মিশে যান তারা। ওই সময়ের একটি ছবি সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে স্যোশাল মিডিয়ায়। যাতে সিয়াম-অবন্তীকে দেখা গেছে পাহাড়ি একটি জনগোষ্ঠীর পোশাকে। সেই পোশাকে এই দম্পতিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘পাংখোয়া’ জনগোষ্ঠীর সদস্য’ হিসেবে!
ছবিতে আরও লক্ষ্য করা গেছে, রাঙামাটি অঞ্চলে কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের (৪১ বিজিবি) সাঁটানো একটি বিলবোর্ড সেটি। যেখানে পাহাড়ি আদিবাসী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু বিপত্তি ঘটে সেখানে সিয়াম-অবন্তীর ছবি নিয়ে। কারণ, সেখানে লুসাই জনগোষ্ঠীর পোশাকে সিয়াম-অবন্তীর ছবিটি দেওয়া হয়েছে। মূলত এটি নিয়েই বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন চিত্রনায়ক সিয়াম। সেখানে স্পষ্ট তথ্য দিয়ে ভক্ত-অনুরাগীদের সামনে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন তিনি।
সিয়াম বিতর্কিত ছবিটি প্রকাশ করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘লুসাই জনগোষ্ঠীর সম্মানিত রাজার আমন্ত্রণে বছর তিনেক আগে সাজেকে ঘুরতে গিয়েছিলাম অবন্তীকে নিয়ে। তাদের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, পরিবেশ ঘুরে দেখেছিলাম। তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেছি, সবার আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছিলাম সেবার।’
কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে ভুল সংশোধন করার আবেদন জানিয়ে নায়ক সিয়াম স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘নিউজফিডে বেশ কয়েক জায়গায় দেখলাম, আমার আর অবন্তীর এই ছবিটি একটি সাইনবোর্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানে আমাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে পাংখোয়া জনগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে। আমরা এতে বিব্রত হয়েছি। কারণ এর মাধ্যমে পাংখোয়া জনগোষ্ঠীকে হেয় করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিনীতভাবে অনুরোধ করব, অবিলম্বে আমাদের ছবিটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য।’
অভিনেতা আরও লেখেন, ‘ঘুরতে গিয়েছিলাম পরিবারকে নিয়ে। সেই ছবিটি নিয়ে অনেক জায়গায় দেখলাম নানান রকমের ট্রল হচ্ছে। ভেবেছিলাম অন্য আরও অনেকবারের মতো এবারও এড়িয়ে যাব। কিন্তু ভাবলাম কিছু বলা উচিত। ট্রল আমরা অবশ্যই করব, মিম আমরা অবশ্যই বানাব— পপ কালচারের অংশ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিসে কাউকে অসম্মান করা হচ্ছে, একটি সম্প্রদায়কে ছোট করা হচ্ছে— সেই বোধ থাকাটাও জরুরি। যে তারুণ্যকে আমি প্রতিনিধিত্ব করি, সেই তারুণ্যের কাছে এই সেনসিবিলিটি তো প্রত্যাশা করতেই পারি।’