উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের রাজধানী খার্তুমে বিমান হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন শিশু। আফ্রিকার এই দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সাথে আধা-সামরিক বাহিনীর তীব্র সংঘাতের মধ্যেই বিমান হামলায় প্রাণহানির এই খবর সামনে এলো।
রোববার (১৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদানের রাজধানী খার্তুমে বিমান হামলায় পাঁচ শিশুসহ ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। শনিবারের এই হামলায় খার্তুমের ঘনবসতিপূর্ণ ইয়ারমুক এলাকার ২৫টি বাড়িও ধ্বংস হয়ে গেছে।
বিবিসি বলছে, সুদানের সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ জেনারেল দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) বিরুদ্ধে হামলা বাড়ানোর হুমকি দেওয়ার একদিন এই বিমান হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।
আরএসএফ জানিয়েছে, খার্তুমের মেয়ো, ইয়ারমুক এবং ম্যান্ডেলা এলাকায় বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে সাম্প্রতিক এই হামলাটি চালানো হয়েছে। অবশ্য সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
গত ১৫ এপ্রিল খার্তুমে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। আর চলতি জুন মাসের প্রথম দিকে আরএসএফ খার্তুমের ইয়ারমুক এলাকার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেওয়ার দাবি করে। মূলত সুদানের রাজধানীর এই এলাকায় অস্ত্র তৈরির কারখানা রয়েছে।
অবশ্য শনিবার যুদ্ধরত উভয় পক্ষ ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৬টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে বলে সৌদি ও মার্কিন মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছে। যদিও অতীতে এই ধরনের যুদ্ধবিরতি খুব কমই মেনে চলা হয়েছে।
উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে টানা দুই মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে নিহত মানুষের সংখ্যার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান সামনে আনা কঠিন। তবে নিহতের সংখ্যা বেশ ভালোভাবেই এক হাজারের বেশি বলে মনে করা হয়। এর মধ্যে উভয় পক্ষের সংঘাতে বহু বেসামরিক নাগরিকও প্রাণ হারিয়েছেন।
জাতিসংঘের মতে, সংঘাতের জেরে সুদানের মধ্যে প্রায় ২২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ৫ লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। ইতোপূর্বে মানুষকে যুদ্ধ থেকে পালাতে সুযোগ দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও সেগুলো পালন করা হয়নি।