জুন ২৯, ২০২৪

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অতিবৃষ্টির ফলে সিলেটে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে এবং সিলেট নগরে বন্যার পানির কারণে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দারা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তবে পানি নামলেও নগর থেকে উপজেলা সবখানেই বন্যার ক্ষতচিহ্ন বেরিয়ে আসছে। এতে পানি নামার সাথে নতুন ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।

সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টির পরিমাণ কম। সিলেটে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় নদ-নদীর পানিও কমছে। তবে পানি কিছুটা ধীরগ তিতে নামছে। এতে আগের তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে পানি আরও কমে আসবে।

এদিকে সিলেট নগরের ২৮টি ওয়ার্ডের মাঝে অধিকাংশ ওয়ার্ডের পানি নেমে গেছে। তবে পানি নামলেও জলাবদ্ধতার ক্ষত স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আর কিছু এলাকায় আংশিক জলাবদ্ধতা গতকালও দেখা গেছে।

সিটি করর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় ছিলেন। সিলেট নগরের ২০টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল থেকে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমেছে। শুক্রবার সকাল ১০টার তুলনায় আজ অনেকটাই কমেছে। সিলেটের দুটি নদীর পানি বর্তমানে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সিলেটের সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি কমলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিপদসীমার ওপরে ছিল। নদীর ওই পয়েন্টে পানির বিপদসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ওই পয়েন্টে পানি ১২ দশমিক ৮৭ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপদসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ওই পয়েন্টে পানি ৯ দশমিক ৯৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমছে। পানি সরে যাওয়ার পর বন্যার ক্ষতচিহ্ন একে একে বেরিয়ে আসছে। তলিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটের ক্ষত বেরিয়ে পড়েছে।

গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, পানি কমতে দেখে অনেকের চোখে-মুখে বাড়ি ফেরার আকুতি থাকলেও ফিরতে পারছে না। ঘরের মেঝেতে পা ফেলতে গেলে হাঁটু পর্যন্ত গেড়ে যায়। এ অবস্থায় নিজের মাথা গোজাই যেখানে দায়, সেখানে গবাদিপশু গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগি কোথায় রাখবে? এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন মানুষ।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *