ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের বিমান হামলা মার্কিন সামরিক কর্মীদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। তাদের দাবি, তুরস্কের ক্রমবর্ধমান এসব কর্মকাণ্ড ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে অর্জিত অগ্রগতিকে বিপন্ন করে তুলেছে।

স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ নভেম্বর) এসব মন্তব্য করে পেন্টাগন। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর সিরিয়ায় কুর্দি মিলিশিয়ার বিরুদ্ধে তুর্কি সামরিক বাহিনীর সাম্প্রতিক এই হামলা সম্পর্কে পেন্টাগনের প্রকাশ্যে এই মন্তব্য কার্যত ন্যাটো-মিত্র তুরস্কের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের কঠোর নিন্দাকেই তুলে ধরছে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র ও মার্কিন এয়ার ফোর্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সিরিয়ায় সাম্প্রতিক তুর্কি বিমান হামলা সরাসরি মার্কিন সামরিক কর্মীদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে যারা সিরিয়ায় স্থানীয় অংশীদারদের সাথে আইএসআইএসকে পরাজিত করতে এবং দশ হাজারেরও বেশি আইএসআইএস বন্দীকে হেফাজতে রাখতে কাজ করছে।’

রাইডার বলেন, ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি এই অঞ্চলে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অগ্রগতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। তিনি বলেন, (কুর্দি মিলিশিয়াদের নিয়ে) তুরস্কের ‘বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগকে’ যৌক্তিক মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।

রাইডার আরও বলেন, ‘আইএসআইএসকে পরাজিত করার মিশনে ফোকাস বজায় রাখার জন্য এবং এই মিশনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সামরিক কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে সিরিয়ায় উত্তেজনা নিরসন করা প্রয়োজন।’

রয়টার্স বলছে, সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৯০০ সৈন্য রয়েছে। এসব মার্কিন সেনা প্রধানত দেশটির উত্তর-পূর্বে সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এর সাথে কাজ করে। এই গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ওয়াইপিজির কুর্দি যোদ্ধারা ইসলামিক স্টেটের অবশিষ্টাংশের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বুধবার বলেছেন, সিরিয়ায় তুরস্কের বিমান হামলা কেবল শুরু হয়েছে এবং প্রতিশোধমূলক হামলা বৃদ্ধির পর তুরস্ক সেখানে স্থল অভিযান শুরু করবে।

আঙ্কারা এক সপ্তাহ আগে ইস্তাম্বুল বোমা হামলার প্রতিশোধ নিতে গত সপ্তাহান্তে সিরিয়ায় বিমান অভিযান শুরু করে। ওই বোমা হামলায় ছয়জন নিহত হয় এবং এর জন্য তুরস্ক ওয়াইপিজিকে দায়ী করে। তবে সেই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি এবং পিকেকে ও ওয়াইপিজি এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।

তুরস্ক এর আগে সিরিয়ায় কুর্দি ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) শাখার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে সামরিক আক্রমণ চালিয়েছিল। পিকেকে’কে অবশ্য আগেই তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসাবে মনোনীত করেছে।

উত্তর সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযানের কারণে মার্কিন সামরিক কর্মীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৯ সালে এই অঞ্চলে অবস্থানরত আমেরিকান সৈন্যরা তুরস্কের অবস্থান থেকে গোলাবর্ষণের শিকার হয়েছিল।

সেই সময়ে মার্কিন-মিত্র কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করেছিল তুরস্ক।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...