ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে ‘সিনিয়র সচিব’ পদমর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে বিএসইসি’র দশম চেয়ারম্যান হিসেবে চলতি বছরের গত ১৯ আগস্ট থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।

গত রোববার (৩ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, “বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- এর চেয়ারম্যান পদে কর্মকালীন সময় পর্যন্ত সরকারের সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাইজিংবিডিকে বলেন, “বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা প্রদান করায় আমরা গর্বিত। এ জন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে তাকে জানাই অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। তার দক্ষ নেতৃত্বে বিজ্ঞ কমিশন আগামীতে পুঁজিবাজার সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। পুঁজিবাজারকে বিশ্বমানের অবস্থানে নিয়ে যেতে যেসব পলিসি সাপোর্ট দরকার, তা নিয়ে কমিশন আগামীতে কাজ করবে। আমরা আশাবাদী যে, বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে আগামীতে ভাইব্রেন্ট, ম্যাচিউর, ইফিশিয়েন্ট এবং সাসটেইনেবল গ্রোথ পুঁজিবাজারে দেখা যাবে।”

তথ্য মতে, গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ১০ আগস্ট বিএসইসি’র চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এরপর গত ১৮ আগস্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) উপসচিব ফরিদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ এর ধারা ৫ ও ৬ বিধান প্রতিপালন ও উক্ত আইনের ধারা ৫(২) অনুসারে তাকে আগামী চার বছরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হইলো।

প্রসঙ্গত, বিএসইসিতে কাজে যোগদানের আগে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। বাংলাদেশ ও বিদেশে ব্যাংকখাতে সুদীর্ঘ ৩০ বছর বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের। তিনি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ছিলেন। রাশেদ মাকসুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৯২ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংকে একজন ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবনের শুরু করেন। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে যোগদানের আগে তিনি এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এবং সিটি ব্যাংক এন. এ. বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কান্ট্রি অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সাফল্যমণ্ডিত ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে তিনি বিভিন্ন কর্পোরেট ব্যাংকিং গ্রুপ জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনার পদগুলোতে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন সিটি ব্যাংক এন. এ. এর আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রুপের প্রধান। নেতৃত্ব দেওয়ার অসাধারণ সক্ষমতার জন্য তার সুনাম রয়েছে। এরপর তিনি বাংলাদেশে এই ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেন বিভাগের পরিচালক ও প্রধানও হন। তারপরে পদায়ন পান সিটি ব্যাংকের জাকার্তা অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে।

২০১১ সালে রাশেদ মাকসুদকে সিটি ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিটি কান্ট্রি অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশে মিডাস ফাইন্যান্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে একজন উপদেষ্টাও ছিলেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...