মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ৫২ নেতাকর্মী ও ৩৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা হয়েছে।
গত বুধবার (৯ অক্টোবর) মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাহুলদের আদালতে নিহত মাওলানা নাসির উদ্দিনের ভাই মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মালাটি দায়ের করেন। মামলায় ৯০ জন আসামি ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- সাবেক পৌর মেয়র মীর মো. শাহজাহান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বলধরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান ওরফে ভিপি শহীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সায়েদুল ইসলাম, পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার, পৌর প্যানেল মেয়র সমেজ উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিল আব্দুস সালাম খান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রমেজ উদ্দিনসহ ৫২ জন।
পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- তৎকালীন দায়িত্ব থাকা মানিকগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসি মো. মহিবুল আলম, মদন মোহন বণিক, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সিঙ্গাইর থানার এসআই আদিল মাহমুদ, মোজাম্মেল হোসেনসহ ৩৮ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন গণজাগরণ মঞ্চ থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে ২৪ ফেব্রুয়ারি (রোববার) সিঙ্গাইর পৌরসভার গোবিন্ধল থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। এদিন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রিভলবার, চাইনিস পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ পুলিশ বাহিনীর সাথে উপস্থিত হয়ে বাঁধা দেয়। একপর্যায় সাধারণ মুসুল্লিদের লক্ষ্য করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলে গোবিন্ধল গ্রামের মাওলানা নাসির উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, নাজিম উদ্দীন ও শাহ আলম নিহত হয়। এতে আহত হয় আরও অর্ধশতাধিক সাধারণ মুসুল্লি।
এ ঘটনায় নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো পুলিশ বাদী হয়ে গ্রামবাসী ও স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১ যুগ পর গত ৯ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন নিহত মাওলানা নাছির উদ্দীনের ভাই শহিদুল ইসলাম।