সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

দেশের খাবার তেলের চাহিদা মেটাতে পৃথক দুইটি দরপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার এবং জাতীয় দরপত্রের মাধ্যমে বাকি ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৫১৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ২০২৩-২০২৩ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ২৬ কোটি ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। যার বিপরীতে ইতোমধ্যে ৩ কোটি ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করেছে সংস্থাটি। নতুন করে ২টি প্রস্তাবে আরও ৩ কোটি ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, মোট চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে (সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাসহ) টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির লক্ষ্যে টিসিবি কর্তৃক আন্তর্জাতিকভাবে ৩ কোটি ৩০ লাখ এবং স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সংগ্রহ করা হবে।

গত ২০২১ সালের ২৩ জুন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে অনুমোদনের তারিখ থেকে ২০২৪ সালের ২৬ জুন পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল, ছোলা, বিভিন্ন ধরনের মসলা, সয়াবিন তেল, পাম ওয়েল, লবন, আলু, খেঁজুর আমদানি/স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যে পিপিএ,২০০৬ এর ৬৮(১) ধারার অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

সূত্র জানায়, টিসিবি কর্তৃক ৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক সরবরাহ সংস্থা মালয়েশিয়ার ব্রিজো মেরিন এসডিএন বিএইচডি (স্থানীয় এজেন্ট:সেনা এডিবল অয়েল ইন্ডাষ্ট্রিজ, বাংলাদেশ) এর কাছে দরপ্রস্তাব আহ্বান করে। গত ২৭ আগস্ট সংস্থাটি দরপত্র প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাপ্তরিক প্রাক্কলিত মূল্য ১.২৫ ডলার। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি নেগোশিয়েটের মাধ্যমে প্রতি লিটারের দাম ১.২০ ডলার হিসেবে সংস্থাটি ৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহে রাজি হয়।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে নির্বাচিত পতিষ্ঠান ব্রাজো মেরিন এসডিএন বিএইচডির কাছ থেকে ব্রাজিল/তানজানিয়া উৎসের ৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ২ লিটার পেট বোতলে প্রতি লিটার ১.২০ ডলারে (১ মার্কিন ডলার=১০৯.৫০ টাকা) ক্রয়ের সুপারিশ করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দর ও দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দরের প্রতি লিটারের পার্থক্য (১.২৫-১.২০) বা ০.০৫ ডলার কম। নির্ধারিত দরে টিসিবির গুদাম পর্যন্ত সব খরচসহ প্রতি লিটারের দাম ১৫৫.৯৩৩ টাকা।

উল্লেখ্য, বর্তমানে স্থানীয় বাজারে সয়াবিন তেলের প্রতি লিটারের গড় মূল্য থেকে (১৭২.৫০-১৫৫.৯৩৩)=১৬.৫৬৭ টাকা কম। এর আগে গত ২১ আগস্ট তারিখে উন্মুক্ত দরপত্রের (জাতীয়) মাধ্যমে ২ লিটার পেট বোতলে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৫৯.৮৫ টাকা দরে ক্রয় করা হয়েছে। যা থেকে মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত দর ১৫৯.৮৫-১৫৫.৯৫৫)=৩.৯১৭ টাকা কম। অর্থাৎ ১৫৫.৯৩৩ টাকা হিসেবে ৩ কোটি ৩০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে ব্যয় হবে ৪৩৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

অন্যদিকে, স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যম ক্রয় করা হবে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল। স্থানীয় দরপত্রে মোট ৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এতে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রডাক্ট লিমিটেড এই সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দর ধরা হয় ১৭১.৩২ টাকা। বসুন্ধরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে ১৫৯.৮৫ টাকায়। টিসিবির গোডাউন পর্যন্ত ২লিটার পেট বোতলে এই সয়াবিন পৌঁছে দিতে মোট খরচ হবে ৭৯ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

সূত্র জানায়, এ সংক্রান্ত ২টি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *