সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. নাহিদ ইসলাম ফাহিম। মাত্র ২৬ বছর বয়সে জাতির ‘কাণ্ডারি’ হয়ে স্বৈরাচারের কবল থেকে ১৬ কোটি জনগণকে মুক্ত করেছেন তিনি। ‘মুক্তিদাতা’ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের মানুষের কাছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা কে এই নাহিদ ইসলাম? কিভাবে সাধারণ আন্দোলনকারী থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হলেন, চলুন জেনে নেই-

মিষ্টভাষী ও মিশুক প্রকৃতির যুবক নাহিদ। বক্তব্য দানে বেশ পটিয়সী। কর্মসূচির নাম নির্ধারণে বেশ বৈচিত্র্য দেখিয়েছেন তিনি। আন্দোলনে সুশৃঙ্খলভাবে সমন্বয় করতে পেরে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছেন নাহিদ।

নাহিদ ইসলামের ডাকনাম ‘ফাহিম’। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন তিনি। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। বাবা শিক্ষক। মা ঘর সামলে সন্তানদের মানুষ করেছেন। ছোট এক ভাই রয়েছে তার। নাহিদ বিবাহিত।

মাসখানেক আগেও বাংলাদেশের হাতেগোনা কয়েকজন মানুষই জানতেন নাহিদের নাম। সেই নাহিদই এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন।

গত মাসে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছিল তখন প্রাথমিকভাবে নাহিদ ততটা পরিচিত মুখ ছিলেন না। কিন্তু জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় নাহিদকে ‘অপহরণ’ করার পর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়কের নাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে তাকে দু’বার আটক করা হয়। প্রথমবার, ১৯ জুলাই সাদা পোশাকধারী বেশ কয়েকজন লোক তার এক বন্ধুর বাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। চোখে কাপড় বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে তার উপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়। দু’দিন পর পূর্বাচলে একটি ব্রিজের তলায় নিজেকে আবিষ্কার করেন নাহিদ। এরপর নিজেই কোনোরকমে একটি রিক্সায় উঠে বাড়িতে ফেরেন। দ্বিতীয়বার, ২৬ জুলাই ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারী ছাড়াও নাহিদ ইসলামের রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় নেতা। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে বেরিয়ে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের নেতৃত্বে গড়ে তোলা হয়েছিল গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা, দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *