সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বিশ্বের ১২টি দেশ দ্বাদশ নির্বাচন সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবে বলে ইসিকে জানিয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।

অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছিল। তাদের আবেদনের সুপারিশ কমিশনে উপস্থাপন করেছিলাম, কমিশন তা অনুমোদন করেছে। বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং সাংবাদিকদের জন্য এই সময় বৃদ্ধি করে ৭ ডিসেম্বর করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী যেকোনো সংস্থা বা ব্যক্তি নির্ধারিত পদ্ধতিতে ইসির ওয়েবসাইটে দেওয়া ফরম পূরণ করে এই সময়ের মধ্যে আবেদন করতে পারবে। কোনো ধরনের তথ্য জানার দরকার হলে ইসিতে যোগাযোগ করতে পারবে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যা আবেদন পেয়েছি তা দেশ হিসেবে ১২টি দেশের বিভিন্ন পর্যবেক্ষকের আবেদন পেয়েছি। সংস্থা হিসেবে চারটি সংস্থার আবেদন পেয়েছি। তারা আমাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসার সম্মতি জানিয়েছে। সংখ্যা হিসেবে বিবেচনা করলে ৩০ থেকে ৩২। তবে এই সংখ্যা সামনে বাড়তে পারে। চারটি সংস্থার মধ্যে আফ্রিকান ইলেকটোরাল থেকে ১১ জন, সাউথ এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ফোরামের চার জন, আইআরআই’র পাঁচ জন এবং ইইউ থেকে চার জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসবে।

অতীতের সঙ্গে তুলনায় পর্যবেক্ষণে সাড়া মিলেছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভালো সাড়া পেয়েছি। ব্যক্তি হিসেবে ও সংস্থা হিসেবে আমাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অনেকে আসবে। ঢাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনের কাছে আবেদন আহ্বানের সময় বৃদ্ধির বিষয়টি অবহিত করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নতুন প্রকল্প, অর্থছাড় ও ত্রাণ-অনুদান বিতরণে স্থগিতাদেশ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় অনুদান দেওয়া, নতুন প্রকল্প গ্রহণ এবং অর্থ অবমুক্তকরণ স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে নির্বাচনী এলাকায় নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান-ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও স্থগিত রাখতে বলেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেয় সংস্থাটি।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ (সংলগ্নী-২) এর বিধি ৩ক অনুযায়ী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে অর্থাৎ নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোন সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল হতে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ দেওয়া বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না। এ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে এবং অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উল্লিখিত আচরণ বিধিমালার বিধি ১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় হবেন।

ইসি জানায়, সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখার লক্ষ্যে নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় কোনো প্রার্থী সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পত্তি তথা অফিস, যানবাহন, মোবাইল ফোন, টেলিফোন, ওয়াকি-টকি বা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না। এমনকি মাশুল প্রদান করেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারীকে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

তাছাড়া, কোনো প্রার্থী সরকারি অর্থে ক্রয়কার্য সংক্রান্ত কোনো দরপত্র আহ্বান, গ্রহণ কিংবা বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন না। সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৩ অনুসারে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উন্মোচন করতে পারবে না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় অনুদান/ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ইতোপূর্বে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত বা প্রদান করা নিতান্ত আবশ্যক হলে জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের উল্লিখিত নির্দেশনার আলোকে একটি পরিপত্র জারি করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

অপর এক নির্দেশনায় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ (সংলগ্নী-২) এর বিধি ৩ক অনুযায়ী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে অর্থাৎ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ দেওয়া বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না। এ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্টরা উল্লিখিত আচরণ বিধিমালার বিধি ১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় হবেন।

এ প্রসঙ্গে ইসি কর্মকর্তারা জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান-ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যেসব ত্রাণ কার্যক্রম আগে থেকে পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এ ছাড়া, নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় উল্লিখিতভাবে নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ ত্রাণ-অনুদান বিষয়ক কার্যক্রম গ্রহণ না করার জন্য এবং কোনো এলাকায় অনুদান-ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত নতুন কার্যক্রম গ্রহণ আবশ্যক হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি নিতে হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *